ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

যেভাবে ওষুধ সেবন করলে রোজা নষ্ট হয় না

অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

প্রকাশিত : ১১:৩৩ এএম, ১৯ মে ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৪:৩৩ পিএম, ১৯ মে ২০১৮ শনিবার

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ

মাহে রমজানে রোগীদের মধ্যে কিছু বিষয়ে দু:শ্চিন্তা কাজ করে। ওষুধ সেবন কীভাবে করবেন, ওষুধ সেবন করলে রোজা ভেঙে যাবেন কিনা এসব নিয়ে শত প্রশ্ন এতে উকি দেয় রোগীদের মনে।
চিকিৎসকগণ ধর্মীয় চিন্তাবিদ ও আলেমদের সঙ্গে আলাচনা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, রোজা থাকাবস্থায় বেশ কয়েকটি পন্থায় ওষুধ সেবন ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে রোজা নষ্ট হবে না। রোজা রাখাবস্থায় চোখ, কান ও নাকে ড্রপ নেওয়া যাবে। এছাড়া হৃদরোগীর বেলায় বুকে ব্যথা হলে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে বা ট্যাবলেট জিহ্বার নিচে নিতে পারবেন।
নারী রোগীর তলপেটে পরীক্ষার জন্য যোনিদ্বার দিয়ে চিকিৎসক বা নার্স হাতের আঙুল অথবা কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না। এমনকি চিকিৎসার জন্য যোনিপথে পেসারি বা কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে।
মূত্রথলি পরীক্ষা বা এক্স-রে করার জন্য রোগীর প্রস্রাবের দ্বার দিয়ে ক্যাথেটার অথবা অন্য কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে অথবা রেডিও-ওপেক ডাই প্রবেশ করালে রোজা ভঙ্গ হবে না।
দাঁত তোলা, ড্রিলিং করা বা মেসওয়াক বা ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা যাবে, তাতে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এগুলো করার সময় যেন পাকস্থলীতে থুতু বা টুথপেস্ট প্রবেশ না করে। রোগীর চামড়া, মাংস, অস্থিসন্ধি ও শিরায় ইনজেকশন দেয়া যাবে। কিন্তু স্যালাইন, ডেক্সট্রোজ প্রোটিনজাতীয় জিনিস ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
যে কেউ রক্ত অন্যকে দিতে পারবেন আবার জরুরি প্রয়োজনে নিজেও নিতে পারবেন। কোনো রোগী অক্সিজেন অথবা অজ্ঞানকারী গ্যাস (অ্যানেসথেসিয়া) নিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। ত্বকের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে যায় এমন মলম, ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে। পরীক্ষার জন্য রোগীর শরীর থেকে রক্ত নেয়া যাবে। হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী হার্টের এনজিওগ্রাম এবং কার্ডিয়াক ক্যাথেটার করা যাবে।  রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বা চিকিৎসার অংশ হিসেবে এন্ডোস্কপি করলে রোজা ভাঙবে না।  মুখ পরিষ্কারের জন্য মাউথ ওয়াশ বা গড়গড়া বা মুখে স্প্রে জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যাবে, তবে যেন পাকস্থলীতে কোনো কিছু না যায়।
জরায়ু পরীক্ষার জন্য শরীরে হিস্টারোস্কপি করা যাবে, এমনকি জরায়ুতে কোনো যন্ত্রপাতি বা অন্য কিছু পরীক্ষার জন্য প্রবেশ করালে রোজায় কোনো সমস্যা হবে না।  
লিভার বায়োপসি অথবা অন্য কোনো অঙ্গের বায়োপসি করলে রোজা নষ্ট হবে না। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ অনুমোদন করেন, যে নাকে স্প্রে বা হাঁপানি রোগীর বেলায় ইনহেলার জাতীয় কিছু নিলে কোনো সমস্যা নেই।  রোগীর পায়ুপথে ইনজেকশন অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আঙুল বা অন্য কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না।  
জরুরি কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে রোজা রাখা অবস্থায় করা যাবে।  কিডনি অকেজো হলে রোগীর ডায়ালাইসিস করলে রোজা ভাঙবে না।
লেখক : ডীন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।  
/ এআর /