ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কফির বিনিময়ে কফিন!

প্রকাশিত : ০৬:০৪ পিএম, ১৯ মে ২০১৮ শনিবার

ছিমছাম কফি শপ। গাছপালা ও কাঠের গুড়ি দিয়ে সাজানো। আছে আধুনিক ডেকোরেশনও। কিন্তু এমনই কফি শপে আপনার টেবিলের পাশে যদি একটি লাশ রাখার কফিন রাখা হয়? আর সেই কফিনে থাকার জন্য যদি লোভনীয় অফার দেওয়া হয়, তাহলে কী থাকবেন সেই কফিনে? মাত্র ৩ মিনিটের জন্য?

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এমনই এক কফি শপ চালু হয়েছে। কিড মাই নামের এই কফি শপের মধ্যে রাখা হয়েছে একটি কফিন। আর এই কফিনে ৩ মিনিট সময় অবরুদ্ধ অবস্থায় কাটিয়ে দিতে পারলেই কফির দামের ওপর ১০ শতাংশ মূল্যছাড় পাবে এর গ্রাহকেরা।

এছাড়াও কফিনের পাশেই আছে এক কংকাল। ছবি তোলা যাবে নিজের ভবিষ্যৎ এই রুপের সাথে। মানুষদের মাঝে ‘মৃত্যুর অভিজ্ঞতা’র কিছুটা পরিচয় করিয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ বলে জানায় কফি শপটি।

শুনতে অনেকটা হাস্যকর মনে হলেও এই কফিনের ভেতর যেতে সাহস করেন খুব অল্প ক’জন মানুষই। আর যারা একটু বুকে সাহস জুগিয়ে কফিনে প্রবেশ করেন বের হওয়ার পর তাদেরকে বেশ শোচনীয় অবস্থায় দেখা যায়।

এই কফিনটির মধ্যে ৩ মিনিট সময় কাটিয়েছেন ব্যাংককের এক কিশোরী টাম্মি। সিএনএন ট্রাভেলসকে তিনি বলেন, “আপনি যখন কফিনের মধ্যে থাকবেন তখন আপনার আসলেই মনে হবে যে আপনি মৃত। কফিনটির মধ্যে থাকতে এমনিতে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু এর ভেতর গেলেই মৃত্যুর চিন্তা মাথায় চলে আসে। আমি এখনও কাঁপছি। আমি আর এর ভেতর যাব না”।

এই কফি শপটি চালু করেছেন ব্যাংককের সেইন্ট জনস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক ভিরানাট রোজানাপ্রাপা। ‘ফিলোসফি এন্ড রিলিজিয়ন’ শীর্ষক তাঁর পিএইচডি ডিগ্রীর গবেষণার জন্য এই রেস্টুরেন্ট চালু করেন তিনি।

মানুষদের মধ্যে মৃত্যু ভয় বাড়ানোর পাশাপাশি লোভ ও দুর্নীতি কমানোর প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এই কফিশপের উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন ভিরানাট। সিএনএনকে তিনি বলেন, “আমাদের ঈশ্বর গৌতম বুদ্ধ মৃত্যু সম্পর্কে আমাদেরকে সচেতন করে গেছেন। তিনি বলেছেন যে, কেউ যখন মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করবে এবং মৃত্যুকে ভয় পাবে তখন সে তাঁর মধ্যেকার ‘আমি’কে সংযত রাখবে”।

“আপনি যদি মনে করেন যে, কালই আপনার মৃত্যু দিন আর কালই আপনি মারা যাবেন, তাহলে যে অল্প কিছু সময় আছে তা কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতি করার জন্য ব্যয় করবে না। নিজের মেধা ও মস্তিষককে দুর্নীতি বা অন্য কোন উপায়ে অর্থ উপার্জনের জন্য ব্যয় করত না”।

কিড মাই নামের এই কফিশপটিতে গত মার্চ মাসের প্রথম দিন চালু হয়। এখানে কফিসহ নানা রকমের পানীয় ও কুকিজ পাওয়া যায়। কফিগুলোর নামকরণে মৃত্যু বিষয়টিকে খুব প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেমন ‘ওয়ান ইয়ার লেফট লাতে’, ‘ওয়ান মানথ লেফট মকা’ এবং ‘লাস্ট ডে এসপ্রেসো’ কফি।

সূত্রঃ সিএনএন

//এস এইচ এস// এআর