খাদ্যনিরাপত্তায় মৌমাছি রক্ষার আহ্বান জাতিসংঘ-ইইউর
প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ২১ মে ২০১৮ সোমবার
খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে ফুলের পরাগ বহনকারী বিভিন্ন পাখি ও কীটপতঙ্গ বিশেষ করে মৌমাছি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে এ ধরনের পাখি ও পতঙ্গ টিকিয়ে রাখতে বৈশ্বিক পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বিশ্বে প্রথমবারের মতো স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড বি ডে’ শীর্ষক সম্মেলন। এ আয়োজন সামনে রেখে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রধান হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা বলেন, যদি পরাগ বহনকারী প্রাণীগুলো না থাকে, তাহলে খাদ্যনিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব হবে না।
এফএওর প্রধান আরো বলেন, আমরা যেসব শস্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকি মৌমাছি, পাখি, বাদুড়, প্রজাপতি ও পোকামাকড় সেসবের অনেকটাই ভার বহন করে থাকে। তিনি বলেন, কীটনাশকের ব্যবহার, বনাঞ্চল হ্রাস এবং বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রভাব এড়াতে জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধির পাশাপাশি তা সুরক্ষার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
পরাগ বহনকারী কীটপতঙ্গ রক্ষার গুরুত্ব এবং স্লোভেনিয়ার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে ওয়ার্ল্ড বি ডে হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। আধুনিক উপায়ে মৌমাছি পালনের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত স্লোভেনিয়ার নাগরিক আন্তন জানসার (১৭৩৪-১৭৭৩) জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০ মেকে বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দিয়েছিল স্লোভেনিয়া। চলতি বছরের সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১৫০ জন মৌমাছিপালক অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ফসলগুলোর ৯০ শতাংশেরই পরাগ বহনে সহায়তা করে মৌমাছি। কিন্তু সম্প্রতি কলোনি কলাপস ডিজঅর্ডার (সিসিডি) নামক রহস্যময় এক রোগে অনেক মৌমাছি মারা যাচ্ছে। এই রোগের জন্য কীটনাশককে অনেকাংশে দায়ী করা হয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মৌমাছি ও প্রজাপতির মতো ৪০ শতাংশ অমেরুদণ্ডী পরাগবাহী বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
সম্মেলনে উপস্থিত ইইউর পরিবেশবিষয়ক কমিশনার কারমেনু ভেলা ঘোষণা দিয়েছেন, পরাগবাহী প্রাণী রক্ষায় আগামী ১ জুন ব্রাসেলস কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করবে। ভেলা আরো বলেন, মূলত এসব প্রাণীর ক্ষেত্রে হুমকি, এর কারণ, প্রভাবগুলো খুঁজে দেখতে হবে। পাশাপাশি পরাগবাহী প্রাণীর সুরক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে। শুধু স্লোভেনিয়া বা ইউরোপ নয় এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বিশ্বজুড়ে।
ফসলের জমিতে নিকোটিনযুক্ত তিন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পক্ষে গত মাসে ইইউভুক্ত দেশগুলো ভোট দেয়। এসব কীটনাশক শুধু গ্রিনহাউজের ভেতরে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়।
সূত্র : এএফপি।
আরকে// এআর