মাধ্যমিকে সরাসরি ১৩৭৮ শিক্ষক নিয়োগ চায় মাউশি
তবিবুর রহমান
প্রকাশিত : ০১:১৫ পিএম, ২১ মে ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১১:৩১ পিএম, ২২ মে ২০১৮ মঙ্গলবার
শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত ও সরকারি মাধ্যমিকে তীব্র শিক্ষক সংকট নিরসনে জরুরিভিত্তিতে এক হাজার ৩৭৮ জন শিক্ষক সরাসরি নিয়োগ দিতে চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মাহাবুবুর রহমান। তিনি জানান, এ প্রস্তাবনাটি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) রয়েছে। সেখান অনুমোদন হলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
কত সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহাবুবুর রহমান বলেন, যেহেতু আমরা পিএসপিতে প্রস্তাবনা পাঠিয়ে দিয়েছি। যেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই আমরা নিয়োগের কর্যক্রম শুরু করব। আমার মনে হয়, সব প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও ৬ মাস সময় লেগে যেতে পারে।
প্রস্তাবে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন ৩৪৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই হাজার ২৬৩ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। পদ শূন্য থাকায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে জরুরিভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক সংকট কাটাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের তালিকা দিয়েছে মাউশি। এতে দুই হাজার ২৬৩ জন শিক্ষকের পদ শূন্য বলে উল্লেখ করা হয়।
এবিষয়ে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েও সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। এ কারণেই সরাসরি নিয়োগের জন্য সম্প্রতি জারি হওয়া চাকরি বিধিমালার আলোকে এই প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়ের একশ’র বেশি শূন্যপদে নিয়োগের চেষ্টা করে নন-ক্যাডার পদে প্রার্থী পাওয়া গেছে পাওয়া গেছে মাত্র চারজন। এভাবে নিয়োগ দিয়ে সংকট কাটবে না। তাই সরাসরি নিয়োগের এই প্রস্তাব করা হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের এক হাজার ৬৫৬টি পদের বিপরীতে কর্মরত সহকারী শিক্ষক এক হাজার ২৯৩ জন,শূন্য পদ ৩৬৩টি। ইংরেজি বিষয়ে সৃষ্ট পদ এক হাজার ৬৫৬টি, এর বিপরীতে কর্মরত সহকারী শিক্ষক এক হাজার ২৯৩ জন, শূন্য পদ ৩৬৩টি। গণিতে সহকারী শিক্ষকের সৃষ্ট পদ এক হাজার ২৪২টি, এরমধ্যে কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৯৭০ জন, শূন্য পদ ২৭২টি। সামাজিক বিজ্ঞানের সৃষ্ট পদ ৮২৮টি, কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৬৪৭ জন, শূন্য পদ ১৮১টি। ভৌতবিজ্ঞানে সৃষ্ট পদ ৮২৮টি, কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৬৪৭ জন, শূন্য পদ ১৮১টি।
ব্যবসায় শিক্ষায় সৃষ্ট পদ ৮২৮টি, এরমধ্যে কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৬৪৭ জন, শূন্য পদ ১৮১টি। ভূগোলে সৃষ্ট পদ ৪১৪টি, কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৩২৪ জন, শূন্য পদ ৯০টি। চারু ও কারুকলা বিষয়ে সৃষ্ট পদ ৪১৪টি, কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৩২৪ জন, শূন্য পদ ৯০টি। শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সৃষ্ট পদ ৪১৪টি, কর্মরত শিক্ষক ৩২৪ জন, শূন্য পদ ৯০টি। ইসলাম ধর্মে সৃষ্ট পদ ৮২৮টি, কর্মরত সহকারী শিক্ষক ৬৪৭ জন, শূন্য পদ ১৮১টি। কৃষি শিক্ষা বিষয়ে সৃষ্ট পদ ৪১৪টি, কর্মরত আছেন ৩২৪ জন, শূন্য পদ ৯০টি। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৫ জন শিক্ষক অবসরে যাবেন।
মাউশির প্রস্তাবে বলা হয়, ‘৩৫ ও ৩৬তম বিসিএস থেকে ৯৬০ জনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষক সংকট নিরসনে এক হাজার ৩৭৮টি শূন্যপদে জরুরিভিত্তিতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য (পদ বিভাজনসহ) শূন্যপদের তালিকা পাঠানো।
টিআর / এআর