ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ভ্রমণে বেরুলে করণীয়

প্রকাশিত : ১০:২৮ এএম, ২২ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

ভ্রমনে বেরুলে দেখতে পাবেন, দেশে দেশে কী অপূর্ব সৌন্দর্য আর অফুরন্ত নেয়ামত সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছেন।

উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে ভ্রমনের জন্য উপযুক্ত সময় হচ্ছে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। ঠাণ্ডায় ভ্রমনের ক্লান্তি কম লাগে, প্রকৃতিকে উপভোগ করা যায় পুরোদস্তুর। ভ্রমন মানেই বিদেশ ভ্রমন নয়। প্রকৃতির অকৃপন দান বাংলাদেশেই রয়েছে দর্শনীয় অসংখ্য জায়গা।

যদি আপনি পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে চান তাহলে চলে যান বান্দরবান, খাগড়াছড়ি বা রাঙামাটিতে। এই জেলাগুলোতে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান যা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। শুধু বান্দরবানেই রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। যেমন বান্দরবান শহরেই রয়েছে অপূর্ব সুন্দর প্রান্তিক লেক। রয়েছে গিরিশৃঙ্গ নীলাচল যেখান থেকে দেখতে পাবেন নয়নাভিরাম দৃশ্য। রয়েছে স্বর্ণমন্দির, শৈল প্রপাত, চিম্বুক পাহাড় আর আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ বেয়ে যেতে হবে নীলগিরি পাহাড়ে। এখানে রয়েছে সেনা বাহিনীর রিসোর্ট যেখানে অনুমতি সাপেক্ষে আপনি রাত্রিযাপন করতে পারেন। এই বান্দরবানেই রয়েছে বাঙলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং।

সমূদ্র ভ্রমণ করতে চাইলে যেতে পারেন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমূদ্র সৈকত কক্সবাজারে। এছাড়াও যেতে পারেন কুয়াকাটা বা পতেঙ্গায়। সমতল ভূমির সৌন্দর্য আর ঐতিহসিক নিদর্শন দেখতে যেতে পারেন বাংলার আনাচে কানাচে। কুমিল্লার ময়নামতিতে রয়েছে শালবন বিহার, নওগাঁয় রয়েছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, বগুড়ায় মহাস্থানগড় আর বেহুলা লখিন্দরের বাসরঘর, নাটোরে রয়েছে বিখ্যাত রাজবাড়ি যা উত্তরা গনভবন নামে পরিচিত, চাঁপাই নবাবগঞ্জে রয়েছে ছোট সোনা মসজিদ ও হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (র.) এর মাজার, রাজশাহীতে হযরত শাহ মখদুম (র.) এর মাজার, দিনাজপুরে স্বপ্নপুরী, রামসাগর ও কান্তজী মন্দির, কুষ্টিয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃাতি বিজরিত কুঠিবাড়ি ও লালন শাহ্র মাজার, রংপুরে ভিন্ন জগত ও রাজবাড়ি, সিলেটে চা বাগান ও হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার, ঢাকায় আহসান মঞ্জিল, লালবাগের কেল্লা, বড়কাটরা, ছোটকাটরা, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, নভোথিয়েটার ও জাতীয় সংসদ ভবনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। 

আবার দেশের বাইরে যেতে চাইলে অল্প খরচে যেতে পারেন ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ বা শ্রীলঙ্কা। শুধু ভারতেই রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। দার্জিলিং, সিমলা, কাশ্মীর বা কন্যাকুমারীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন আপনাকে মুগ্ধ করবে, তেমনি আগ্রা বা দিল্লীর মুসলিম ঐতিহ্য আপনাকে মুহুর্তে নিয়ে যেতে পারে মধ্যযুগের সমৃদ্ধ ভারতে, যে ভারত সেসময়ের ওয়ার্ল্ড জিডিপিতে অবদান রাখতো ২৩ শতাংশ। আধুনিক নগর সৌন্দর্য দেখতে চাইলে চলে যান দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীন, প্যারিস বা আমেরিকা।

তবে যেখানেই যান আপনার যাত্রার প্রস্তুতি যেন হয় পূর্নাঙ্গ। পাসপোর্ট, কারেন্সিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়েছেন কি-না তা দেখে নিন। ক্যামেরা থাকলে তা নিতে অবশ্যই ভুলবেন না। আর প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখুন যেন আপনার যাত্রা হয় নির্বিঘ্নে।

দীর্ঘ সফরে গেলে প্রয়োজনে যাত্রার পূর্বে ইনফ্লুয়েঞ্জা, টায়ফয়েড, হেপাটাইটিস-এ ইত্যাদি ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে পারেন।

যারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এজমা বা অন্যকোনও রোগে ভুগছেন তারা অবশ্যই তাদের   প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। কারণ যাত্রাপথে সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি। প্রয়োজনীয় কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকলে সহজেই সুস্থ থাকা সম্ভব-

১. রাস্তার পাশের রেস্টুরেন্টের খোলা খাবার ও পানি পরিহার করুন।

২. বোতলজাত পানি পান করুন।

৩. রোদ থেকে ঘুরে এসেই ঘর্মাক্ত অবস্থায় গোসল না করে একটু ঠাণ্ডা হয়ে তারপর গোসল করুন।

৪. গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

৫. ঠাণ্ডার সময় পর্যাপ্ত গরম কাপড় সঙ্গে রাখুন। প্রয়োজনে কানটুপি বা মাফলার ব্যবহার করুন। 

একে//