প্রতিটি শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অধিকার আছে: প্রিয়াঙ্কা
প্রকাশিত : ০৮:২৯ পিএম, ২৪ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১০ পিএম, ২৪ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ছবিঃ নুরে আলম
ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত এবং বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেছেন, প্রতিটি শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অধিকার আছে। তাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইউনিসেফ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কার চারদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান ও পরিদর্শন শেষে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন, “আমরা শিশুদের বিভক্ত করছি। যা আমরা পারি না। আজ রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা যদি আমাদের শিশুদের সঙ্গে হয় তাহলে আমাদের কেমন লাগত?”
তিনি আরও বলেন, আজ যদি আমরা এসব শিশুদের পাশে এসে না দাড়াই আর কাল যদি আপনার বা আমাদের শিশুদের সঙ্গে এমন হয় তাহলে পিছন ফিরে এই দিনটির কথা মনে পরবে যে আমরা সেদিন কিছুই করিনি। তবে সেদিন আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা কী কম হিংসা দেখলাম? আমার তো মনে হয় যথেষ্ট হয়েছে। এবার এই শিশুদেরকে তাদের অধিকার, তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে।
রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা শিশুরা এই মুহুর্তে পুরো পৃথিবীর দায়িত্ব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নেওয়া বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন বলিউডের প্রিয়াঙ্কা। এর জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানান ইউনিসেফের এই শুভেচ্ছাদূত।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানের অভিজ্ঞতার আলোকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে কোনো বার্তা দেবেন কী না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি আসলে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি না। তবে এই সমস্যাটি রাজনৈতিক। আর এর সমস্যার সমাধানও রাজনৈতিকভাবে আসবে। আমি এই মুহুর্তে খুবই ছোট মানুষ। যদি কখনও আমি কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারি তখন বলবো। তবে আমাদের এখন এই মুহুর্তে সব থেকে বেশি নজর দিতে হবে শিশুদের দিকে। তাদের বিকাশের দিকে।
তবে রোহিঙ্গা শিশুদের অচিরেই তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকারের পক্ষেও মত দেন প্রিয়াঙ্কা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউনিসেফের কাজেরও প্রশংসা করেন প্রিয়াঙ্কা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিশুদের সঙ্গে নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ইউনিসেফের কাজের ইতিবাচক প্রভাবের ধারণা দেন তিনি। তিনি বলেন, আমি একটি ক্যাম্পে মনসুর আলী নামের মাত্র ৭ বছরের একটি শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি। সে আকাআকি করে। সে যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রথম এসেছিল তখন সে একটি ছবি একেছিল যেখানে একদল শিশু ফুটবল খেলছে। আর সেখানে হেলিকপ্টার, রকেট লঞ্চার এসব দিয়ে হামলা করা হচ্ছে। ইউনিসেফের স্বেচ্ছাসেবক ও শিক্ষকদের ব্যাপক যত্নের ফলে সেই মনসুর আলী এখন শুধু খেলাধূলার ছবি আকে। নাচের ছবি আকে। তার শিক্ষকদের ছবি আকে। এটা খুবই ইতিবাচক দিক। আমার মনে হয়, যত যাই হয়ে যাক আমাদের উচিৎ শিশুদের পাশে থাকা। যেন তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঠিক মত হয়।
প্রসঙ্গত, শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনিসেফের আমন্ত্রণে গত সোমবার বাংলাদেশে আসেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এরপর কক্সবাজার ও আশেপাশের এলাকায় থাকার বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।
এসএইচএস/এসএইচ/