৫ দফা দাবিতে রাজপথে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট
প্রকাশিত : ০৪:২১ পিএম, ২৫ মে ২০১৮ শুক্রবার
৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। ২০ রোজার মধ্যে বেসিক বেতনের সমান ঈদ বোনাসসহ প্রাপ্য সব পাওনা পরিশোধ, ছাঁটাই-নির্যাতন-হয়রানি বন্ধ, ন্যুনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণ, কালক্ষেপণ বন্ধ করে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে মজুরি বোর্ডের সুপারিশ ঘোষণা এবং রোজার মাসে দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি রোধ করার দাবিতে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এর সভাপতি্ত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র কুমার দাস, অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ প্রমুখ। সমাবেশে নেতারা বলেন, দুই ঈদে বেসিক বেতনের সমান বোনাস দেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও সরকার শ্রম আইনে বোনাসের বিষয় উল্লেখ না করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু উৎসব বোনাস কোনও দয়া নয়, এটা শ্রমিকের অধিকার।
নেতার আরও বলেন, প্রতি বছর রোজার শুরুতে শ্রম মন্ত্রণালয় মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সব পোষাক শিল্প শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু মালিকরা ঈদের ছুটির পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত শ্রমিকদের বোনাস-বেতন পরিশোধ না করে শ্রমিকদের জিম্মি করে। ঈদের আগ মুহুর্তে শ্রমিকরা যখন স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য উদগ্রিব হয় তখন মালিকরা শ্রমিকদের বোনাস না দিয়ে বকশিশ হিসেবে কিছু টাকা দিয়ে আর আংশিক বেতন দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে। শ্রমিকদের তখন প্রতিবাদ করার কোনও সুযোগ থাকে না। সরকারও প্রতারক মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। পুর্ণ বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শ্রমিকরা অল্প ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে যেতে যেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
সভায় বলা হয়, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ন্যুনতম মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণা দেওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। গত ১৯ মার্চ মজুরি বোর্ডের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মজুরি বোর্ডের নির্ধারিত বৈঠক মালিক পক্ষের আবেদনে স্থগিত করা হয়। শ্রম আইনের ১৩৯ (২) ধারা অনুসারে মজুরি বোর্ড, গঠনের ছয় মাসের মধ্যে নতুন মজুরির সুপারিশ করবে। সেই হিসেবে মজুরি বোর্ডকে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে নতুন মজুরি কাঠামোর সুপারিশ করতে হবে। আথচ মজুরি বোর্ডে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বি.জি.এম.ই.এ এর সভাপতি বলছেন, তাদের হাতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় আছে। বি.জি.এম.ই.এ এর সভাপতির এই বক্তব্য ও মজুরি বোর্ডের বৈঠক স্থগিত করানো মুলত কালক্ষেপণের ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে।
নেতারা ২০ রোজার মধ্যে শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন-ভাতা পরিশোধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় মালিকদের বহন করতে হবে। কালক্ষেপণ না করে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা ঘোষণা করার আহ্বান জানান নেতারা। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রাপ্তিকে নিশ্চিত করতে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি।
একে/ এমজে