ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

যাকাত: একটি আহবান  

প্রকাশিত : ০৫:৫১ পিএম, ২৫ মে ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০২:৩৭ পিএম, ২ জুন ২০১৮ শনিবার

যাকাত কল্যাণকর একটি ব্যবস্থা। দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা অপরিসীম। যাকাত একটি ফরজ ইবাদত। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে যাকাত তৃতীয় স্তম্ভ। নামাজের পরেই যাকাতের স্থান। যাকাত আল্লাহ তায়ালার নির্দেশানুযায়ী ঈমানদারদের জন্য অবশ্য পালনীয় একটি ইবাদত। সামাজিক নিরাপত্তার জন্য যাকাত অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি ব্যবস্থা। গরীব ও দু:স্থদের জন্য একটি হক। যাকাত কোনো প্রকার দান বা অনুকম্পা নয়। শাব্দিকভাবে যাকাত দ্বারা বৃদ্ধি পাওয়া, পবিত্রতা লাভ করা, প্রাচুর্য বা বরকতমন্ডিত হওয়া ইত্যাদিকে বুঝায়।   

যাকাত দ্বারা যাকাতদাতার সম্পদের যেমন পবিত্রতা ও বৃদ্ধি আসে, তেমনি আত্মার পরিশুদ্ধতা লাভ হয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে-‘হে মাহবুব! তাদের সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহণ করুন, যা দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করবেন (সুলা তওবা, আয়াত১০৩)।  

আল্লাহ তা’আলা ধ্বংস করেন সুদকে আর (উভয় জগত) বর্ধিত করেন (সাদকা যাকাত ইত্যাদি)দানকে(সূরা বাকারা আয়াত-২৭৬)। আর যা কিছু তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করো, তিনি তার পরিবর্তে আরো অধিক দেবেন (সূরা সাবা আয়াত-৩৯)।

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর মালিকানায় নগদ আদায়যোগ্য ঋণের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থাকলে পূর্ণ এক চন্দ্রবছর অতিবাহিত হওয়ার পর তার ওপর যাকাত আদায় করা ফরজ হয়ে যায়।

যাকত না দেওয়ার শাস্তি সম্পর্কে আল-কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা স্বর্ণ-রূপা বা টাকা-পয়সা সঞ্চয় করে রাখে, আল্লাহর রাস্তার সেটা ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সু-সংবাদ দিয়ে দাও। ওই স্বর্ণ-রূপা জাহান্নামের আগুনে গরম করা হবে এবং তা দ্বারা কপালে, তার পাঁজরে ও পিঠে (অর্র্থাৎ শরীরের বিভিন্ন স্থানে) শেক দেওয়া হবে এবং বলা হবে, নিজেদের জন্য যেটা সঞ্চয় করে রেখেছিলে এটাতে তা-ই! এখন সেই সঞ্চয়ের স্বাদ আস্বাদন করে দেখ (সুলা তওবা, আয়াত-৩৫)।

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, যারা সম্পদ কার্পণ্য করে যা আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে দান করেছেন, তারা যেন মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য কল্যানকর। বরং সেটা তাদের গলায় বেড়ি বানিয়ে পরিয়ে দেওয়া হবে(সূরা আল-ইমরান-১৮০)।

অন্য আয়াতে নামাজের পাশাপাশি যাকাতের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর (সূরা আন-নূর,আয়াত-৫৬)।

যাকাতের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজ থেকে দরিদ্র বিমোচন করা। কিন্তু আমাদের দেশে প্রচলিত যাকাত দান পদ্ধতির সুফল সমাজের দরিদ্র্য জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে না। যারা যাকাত নিচ্ছেন সব সময়ই নিয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়না। অথচ যাকাতের মর্মবাণী হলো, যারা একবার যাকাত নেবেন তাদের আর কোনো দিন যাকাতের জন্য আসতে হবে না। যাকাতের অর্থে দরিদ্র মানুষকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে সমাজ থেকে ক্রমান্বয়ে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব। (সংগৃহীত)

এমএইচ/এসি