ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৮ ১৪৩২

শৈল্পিক আবহে বেগম রেস্টুরেন্ট

শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ২৫ মে ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১০:২০ এএম, ২৬ মে ২০১৮ শনিবার

বর্তমান সময়ের রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের পসরার সাথে থাকে দৃষ্টিনন্দন ইন্টেরিয়র। অনেক রেস্টুরেন্ট তাদের বিশেষ আভ্যন্তরীণ নকশা দিয়েই গ্রাহক আকৃষ্ট করে থাকে। তেমনি ভিন্ন আঙ্গিকের এক রেস্টুরেন্ট বেগম রেস্টুরেন্ট।

বেগম রেস্টুরেন্টে ঢুকলেই চারদিকে দেখা যাবে অনেক ধরণের চিত্রকর্ম। মাথার ওপরের সিলিং থেকে ঝুলছে বর্ণিল কারুকাজ করা ছাতা। রেস্টুরেন্টের দেয়ালে, টেবিলের পাশে সবজায়গাতেই আছে শৈল্পিক চিত্রকর্মের উপস্থিতি।

রেস্টুরেন্টটির মূল অংশ ছাড়িয়ে ভেতরের খোলা অংশে গেলে দেখা যাবে আরও বৈচিত্র্য। গ্রাহকদের খাবারের অভিজ্ঞতায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে রাখা হয়েছে ডিঙ্গি নৌকা। নদী মাতৃক বাংলার ঐতিহ্যের ধারক এই নৌকায় বসেই খাবার গ্রহণ করতে পারবেন গ্রাহকেরা। রেস্টুরেন্টটির ইন্টেরিওর ডিজাইন করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী রন্নি আহমেদ। 

রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের এই ইন্টেরিয়র আর চিত্রকর্ম একটি বিশেষ ধরণের। আর তা হলো, এসব শিল্পকর্ম রচিত হয়েছে সুফিবাদী আদর্শ থেকে। বিশেষ করে সেখানকার অয়েল পেইন্টিংগুলো। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সুফিবাদী চিত্রকররা এসব চিত্রকর্ম এঁকেছেন।

রেস্টুরেন্টটি যাওয়ার সড়কটিও বেশ উপভোগ্য। রাজধানী থেকে যারা এই রেস্টুরেন্টে যেতে চান তাদেরকে কুড়িল থেকে উলুখোলাগামী ৩০০ ফিট সড়ক ধরে যেতে হবে। উপভোগ করার মতো একটি লং ড্রাইভও হয়ে যাবে এই সুযোগে। ৩০০ ফিট সড়ক হয়ে ঢাকা নরসিংদী সড়কে উঠে পাঁচদোনার দিকে কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই চোখে পরবে রেস্টুরেন্টটি।

দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা আছে রেস্টুরেন্টটি। মূলত দেশীয় খাবার পাওয়া যায় বেগম রেস্টুরেন্টে। সাদা ভাত, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, মুরগীর ঝাল ফ্রাই, গরুর ভুনা, হাসের মাংস, মাছ ইত্যাদি খাবার। বিভিন্ন পদ মিলিয়ে প্রতিজনের খাবারে খরচ হতে পারে ২৫০-৩০০ টাকা। খাবার পরিবেশনেও বেগম রেস্টুরেন্টের আছে নিজস্ব স্টাইল। বিভিন্ন পদের ভর্তা গাছের পাতায় মুড়িয়ে পরিবেশন করা হয় এখানে।

 

চলতি রমজান মাস উপলক্ষ্যে ইফতারের বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছে রেস্টুরেন্টটি। ‘আক্কালা প্যাক’ নামে ইফতারির বিশেষ মেন্যু পাওয়া যাবে এখানে।  

রেস্টুরেন্টটিতে আয়োজিত হয় চিত্র প্রদর্শনীও। দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য সুফি চিত্রকরেরা এতে অংশ নেন। এছাড়াও স্থানীয় পানজুরা এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বিনামূল্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষারও আয়োজন করে বেগম রেস্টুরেন্ট।

রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তা সিমি শায়লা নুর বলেন, “আমরা এখানের সবকিছুইতে বৈচিত্র্য রাখতে চেয়েছি। সুফিবাদী চিন্তাধারা এক্ষেত্রে আমাদের ডিজাইনে বেশ প্রভাব রেখেছে। আমরা চাই, আমাদের ক্রেতারা যেন সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি সুন্দর একটি পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে পারেন।  

এবারের ইফতারে তাই পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন বেগম রেস্টুরেন্টকে।