ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

একরামসহ সব হত্যার নির্বাহী তদন্ত হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  

প্রকাশিত : ০৯:৪৬ পিএম, ৩০ মে ২০১৮ বুধবার

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, টেকনাফের কাউন্সিলর একরামুল হকসহ দেশব্যাপী মাদক অভিযানে সব ‘হত্যা’র তদন্ত হবে।    

আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক করেন। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান শুরুর পর গত কিছুদিন ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ীরা নিহত হচ্ছেন। অভিযানে এ পর্যন্ত শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এ বন্দুকযুদ্ধের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। কক্সবাজারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ঘটনাটি তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে নিরাপরাধ বলছেন। নাম বিভ্রাটের কারণে ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা একরামকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।  

কক্সবাজারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু একরাম কেন? (মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে) যে কয়টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে সবগুলোর বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তদন্ত হবে। সেই তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিচার হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে, সেখানে একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে দেখবেন, গান ফায়ারটি সঠিক ছিল কিনা। এই দেশে সেই ব্যবস্থা রয়েছে। যদি অন্যায়ভাবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত অনুযায়ী সেই ব্যবস্থাও হবে।  

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে মাদক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সেটা সম্পর্কে তিনি (রাষ্ট্রদূত) বলেছেন ঠিকই আছে, তিনিও প্রশংসা করেছেন।’

‘তিনি তার উদ্বেগের কথা বলেছেন যে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মানুষ মারা যাচ্ছে, নিহত হচ্ছেন। সে বিষয়ে তিনি কথাবার্তা বলেছেন। আমরা জানিয়েছি, এদেশ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস আমরা যেভাবে কন্ট্রোল করেছি এদেশের জনগণকে নিয়ে...আজকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন মাদক যেভাবে বিস্তার লাভ করছে, সেটা যদি আমরা বন্ধ করতে না পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ হারিয়ে যাবে। তিনি সবই স্বীকার করেছেন।’

আসাদু্জ্জামান খান বলেন, ‘তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি- মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি এবং সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রথমে আমাদের গোয়েন্দারা লিস্ট তৈরি করেছে- কারা কারা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত, কারা কারা মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত। কারা সহযোগিতা করছেন। আমরা একটি নয়, পাঁচটি সংস্থার মাধ্যমে এই তালিকাটি তৈরি করেছি, তালিকায় যে সব নামগুলো কমন সেই নামগুলো নিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের এনজিওরা, জনপ্রতিনিধিরা, শিক্ষক-ছাত্র-জনতা, পেশাজীবী সবাই এই যুদ্ধে শরীক হয়েছেন। প্রচার-প্রচারণাও আমরা চালাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘মাদক বন্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করছে কিন্তু ইয়াবা প্রতিরোধের জন্য মিয়ানমার আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না সেটাও আমরা জানিয়েছি।’

‘সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, কোনো ক্রসফায়ার আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী করে না। কোন হত্যাকাণ্ড নিরাপত্তা বাহিনী করে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কি করছে- লিস্ট নিয়ে, কমন লিস্টে যাদের নাম আছে তাদের বাড়িতে গিয়ে বা তাদের ধরে আইনের আওতায় আনার জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছে। যারা সারেন্ডার করছে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কিংবা রেগুলার কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা সারেন্ডার করতে অস্বীকার করছে যারা চ্যালেঞ্জ করছে, যারা ফায়ার ওপেন করছে, আত্মরক্ষার্থে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীও গান ফায়ার করছে।’  

এসি