যে কারণে গাঁজা সেবন বৈধ হচ্ছে কানাডা
প্রকাশিত : ০৫:০৪ পিএম, ৩ জুন ২০১৮ রবিবার
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, বিশেষভাবে তৃতীয় বৃহত্তম শহর ভ্যাঙ্কুভারে গাঁজা ব্যবহারের চল রয়েছে বহুদিন ধরে। ভ্যাঙ্কুভারকে বলা হয় ক্যানাডার গাঁজার রাজধানী। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাঁজার ফার্মও রয়েছে এই শহর থেকে সামান্য দূরে ফ্রেজার ভ্যালিতে। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তের কাছাকাছি এটি। এই গ্রীষ্ম মৌসুমের শেষে ক্যানাডা হবে প্রথম কোন শিল্পোন্নত দেশ যেখানে শুধু ওষুধের জন্য নয়, বিনোদনের জন্য গাঁজার ব্যবহার বৈধ করা হবে। অবশ্য চিকিৎসায় রোগের উপশম হিসেবে এই দেশটি ২০১১ সালেই গাঁজা ব্যবহারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল।
বাণিজ্যিকভাবে গাঁজা চাষে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানি ক্যানোপি গ্রোথ । ক্যানোপি গ্রোথ-এর রোগীদের শিক্ষা এবং প্রচার বিভাগের পরিচালক হিলারি ব্ল্যাক বলেন, একবার এক মহিলার সাথে তার দেখা হয়েছিল। আর্থ্রাইটিস রোগে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। তিনি তার বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে বসে গাঁজা খেয়েছিলেন। ওই রোগীর ওপর গাঁজার প্রতিক্রিয়া ছিল বিস্ময়কর।
সেবনের কিছুক্ষণ পর তিনি তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করতে শুরু করলেন। হাত-পা ছড়িয়ে দিতে শুরু করলেন। এবং তিনি কেঁদে ফেললেন। আইন তাকে এতদিন এই ভেষজ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে এটা মনে করে তিনি খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বলে জানালেন হিলারি ব্ল্যাক।
জাতীয় জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে ৭০ শতাংশ কানাডিয়ান গাঁজাকে আইনসিদ্ধ করার পক্ষে। যারা সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন, তারাও গাঁজার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতী। তারা বলছেন, গাঁজা সেবনের ওপর আইনটি সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে।
কানাডার সংসদের উচ্চকক্ষ সেনেটে কনজারভেটিভ পার্টির উপ প্রধান ইওনা মার্টিন বলেন, এই খসড়া আইনের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের তরুণ সমাজকে রক্ষা করা।
টরেন্টোর সাবেক পুলিশ প্রধান বিল ব্লেয়ারকে বিবিসির সংবাদদাতা জিজ্ঞেস করেছিলেন, তারা কী পরিস্থিতি ভালোর দিকে না নিয়ে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন?
ব্লেয়ার জবাবে বলেন, তারা শুধু এই মাদককে বৈধই করছেন না। নতুন আইনের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়ে এর উৎপাদন, বিক্রি এবং বণ্টনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছেন। তারা একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে চাইছেন যে এই মাদক যেন শিশুদের কাছে বিক্রি করা না হয়। আগে আইন না থাকায় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ছিল না বলে তিনি জানান।
গাঁজার ব্যবহার বৈধ করার প্রশ্নে ক্যানাডার এই পরীক্ষানিরীক্ষা কতখানি সফল হয় সে দিকে তাকিয়ে থাকবে সারা বিশ্ব। কানাডার নেতারাও সেটি বোঝেন। সুতরাং, তারা যাতে সফল হতে পারেন, সেই চেষ্টাই তারা করবেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।
আরকে/এসএইচ/