ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে জার্সি-পতাকা বিক্রির ধুম

কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক  

প্রকাশিত : ১০:৩৩ পিএম, ৪ জুন ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৮:৪৫ এএম, ৫ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার

আর ক’দিন পরেই পর্দা উঠবে বিশ্বকাপ ফুটবলের। ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে খেলাপ্রমীদের আগ্রহের সীমা নেই। আর তাই প্রিয় খেলোয়াড়ের জার্সি, দেশগুলোর পতাকার পাশাপাশি বিশ্বকাপ রেপ্লিকা সংগ্রহ করছেন ভক্তরা। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে জমে উঠেছে রমরমা ব্যবসা।

ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব বিপণি বিতান ছেয়ে গেছে প্রিয় দলের জার্সিতে। একই সঙ্গে রয়েছে পতাকা ও হাতের ব্যান্ডসহ বাহারি সব পণ্য। ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে জমে উঠেছে বেচাকেনা।

রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে জানা গেছে, বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে পাইকারি ক্রীড়া সামগ্রীর বাজার গুলিস্তান সমবায় মার্কেটে মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকার জার্সিসহ বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনা হয়েছে। বেচাকেনার দৌড়ে পিছিয়ে নেই বঙ্গবাজারও। প্রতিদিন হাজারও ক্রিয়ামোদী ভীর করছেন এসব মার্কেটে।   

এই দুই মার্কেট থেকে ২০ থেকে ২২ কোটি টাকার ফুটবল আয়োজনের নানা পণ্য স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

ক্রীড়া সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসায়ীরা একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে  জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে খুচরা এবং পাইকাররা এসে এসব মার্কেট থেকে জার্সি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। যা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর ক্রীড়াসামগ্রী বিক্রির সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার জার্সি বিক্রি হচ্ছে।

বঙ্গ বাজারের জেনিথ ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের জার্সির চাহিদা ক্রেতাদের আগ্রহের তুঙ্গে। জার্মানি, পর্তুগাল, ইতালি, স্পেনের জার্সির চাহিদা রয়েছে অনেক।

জানা গেছে, থাইল্যান্ড ও চায়না থেকে আমদানিকৃত জার্সিগুলো সাধারণত ৫০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কোথাও কোথাও আরও চড়ামূল্য জার্সি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। 

তবে শত অভিযোগ থাকলেও ফুটবলামোদীরা এসবের তোয়াক্কা করছেন না মোটেও। ঘুরে ফিরে কিনছেন পছন্দের খেলোয়াড়ের নাম লেখা জার্সি এবং দেশের  পতাকা। অনেকে ভিড় করছেন ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসে থাকা দোকানিদের কাছে। সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করেই তারা ছুটছেন এদিক ওদিক।

বঙ্গবাজারে সর্বনিন্ম ২০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের জার্সি পাওয়া যাচ্ছে। আর এসব দোকানে ক্রেতাদের উপচে পরা ভীর। দেশে  প্রস্তুতকৃত এসব জার্সিগুলোই সাধারণ ক্রেতাদের প্রধান ভরসা ।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী এ আর সহেল জানান, এ বছর জার্সির  চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ‘অন্যান্য বিশ্বকাপের তুলনায় এবার জার্সি বিক্রি অনেক বেড়েছে। প্রচুর চাহিদা থাকায় আমরা দিতে পারছি না।

তিনি জানান, চায়না এবং থাইলাণ্ড আসা জার্সি প্রতিটি ৭০০ থেকে ১৫০০ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা ক্রেতাদেরকে অল্প দামে নারায়ণগঞ্জ এবং বঙ্গবাজার থেকে জার্সি এনে ক্রেতাদের সরবরাহ করছি।

তবে এখানে হাফ হাতা জার্সি ৫০০ ও ফুলহাতা জার্সি ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে স্থানীয় কাপড়ে তৈরি জার্সিগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই।

শুধু জার্সিই নয়, বিক্রি হচ্ছে নানান দেশের পতাকা। এসব পতাকা তৈরির জন্য কাজের অবসর নেই পোশাকের কারিগর দর্জির দোকানগুলোতে। গুলিস্তান ও সদরঘাট এলাকার মার্কেটগুলোতে সবেচেয়ে বেশি পতাকা পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে রাজধানীর সব এলাকায় কমবেশি সব দর্জি পতাকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জার্সি ও পতাকার হঠাৎ এ চাহিদায় মৌসুমি ব্যবসা করছেন কয়েক হাজার মানুষ।

পতাকা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  ১০ টাকা থেকে ১৫শ’  টাকা পর্যন্ত দামের বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফুটবলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকা।

এসএইচ/