ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

একটি বিশ্বকাপ এবং ‘দ্য হ্যান্ড অব গড’(ভিডিও)

প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ৫ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার

১৯৮৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের পুরানো স্মৃতি ঘাটলেই ভেসে ওঠে একটি চেহারা। বেটে আর গোলগাল চেহারার সঙ্গে লম্বা চুলের ঝাঁকুনি-সব মিলিয়ে স্মৃতি রোমন্থনে চিত্রপটে ভেসে ওঠে একটি প্রতিচ্ছবি। সেই প্রতিচ্ছবি আরও কারও নয়, ৮৬’র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দিয়াগো ম্যারাডোনার। তবে ৮৬’র বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় স্মৃতি হয়ে আছে ম্যারাডোনার করা ‘দ্য হ্যান্ড অব গডের’ গোলটি।

তখন আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ফকল্যান্ড দ্বীপ নিয়ে যুদ্ধ চলছে। দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সমরযুদ্ধের পাশাপাশি কোয়ার্টার ফাইনালেও রীতিমত যুদ্ধে নেমেছিল ইংল্যান্ড ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। খেলার প্রথমার্ধে গোলশূণ্য ড্র হলে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার শাণিত করে আর্জেন্টিনা। তবে কিছুতেই ইংল্যান্ডের জালে বল পাঠাতে পারছিলেন না ম্যারাডোনারা। অবশেষে খেলার ৫১ মিনিটে ইংল্যান্ডের জালে বল পাঠালেন ম্যারাডোনা। আর এ গোলটিই ফুটবল ইতিহাসের আলোচিত-সমালোচিত হয়ে আছে, আছে চিরভাস্মর হয়ে।

নিজেই সেই গোলের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর হাত দিয়ে গোলটা করিয়ে নিয়েছেন! সেই থেকে গোলটির গায়ে পাকাপাকিভাবে বসে যায় ‘ঈশ্বরের হাতের গোল’ উপাধিটি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ম্যারাডোনা খেলার ৫১তম মিনিটে একটি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। কিন্তু পরে টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায়, গোলটি করার সময় ম্যারাডোনা হাত ব্যবহার করেন। হাত দিয়ে বলে আঘাত করে তিনি সেটিকে গোলপোস্টের দিকে ঠেলে দেন। ম্যারাডোনা নিজেও পরে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি গোলটি ইচ্ছাকৃতভাবেই হাত দিয়ে করেছিলেন, তাঁর মাথা বল স্পর্শ করেনি। সে মুহূর্তে তিনি জানতেনও গোলটি অবৈধ।

ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিলটন সঙ্গে সঙ্গেই অনেক প্রতিবাদ করেছিলেন। চার-পাঁচজন ইংলিশ ফুটবলার গোল বাতিলের দাবি জানিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন রেফারির দিকে। কিন্তু ব্যাপারটি রেফারি সত্যিই বুঝে উঠতে পারেননি। অন্যদিকে ম্যারাডোনাও সতীর্থদের সঙ্গে এমনভাবে গোল উদযাপনে মেতে ওঠেন যে সেটি বাতিল করার চিন্তাও আসেনি কারো মাথায়। তবে এ বিতর্কিত গোলের খানিক বাদেই ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোল করে ইংল্যান্ডকে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়।

শুধু কোয়ার্টার ফাইনালের সাফল্য নয়। পরবর্তীতে সেমিফাইনালেও বেলজিয়ামের বিপক্ষে তিনি জোড়া গোল করেন। ফাইনালে প্রতিপক্ষ পশ্চিম জার্মানির বিরুদ্ধে নিজে গোল করতে না পারলে সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন। আর এতেই ৮৬’র বিশ্বকাপ উঠে আর্জেন্টিনার ঘরে। আর এক বিশ্বকাপই ম্যারাডোনাকে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম শীর্ষ ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

এমজে/