বাবা-মা ধূমপায়ী হলে শিশুর ব্রংকাইটিস-নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে
প্রকাশিত : ১১:২৪ এএম, ৬ জুন ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১১:১৯ এএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার
ধূমপান নিয়ে সতর্ক বার্তা কম হচ্ছে না। কিন্তু ধূমপায়ীরা সাবধান খুব কমই হচ্ছেন। সারা বিশ্বেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধূমপায়ীর সংখ্যা। ধূমপানের পরোক্ষ (প্যাসিভ স্মোকিং) প্রভাবও মারাত্মক ক্ষতিকর। আর এই পরোক্ষ ধূমপান অসুস্থ করে তুলছে শিশুদেরও।
অথচ একাধিক গবেষনায় দেখা গেছে যে, সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে প্রায় ১০০টি অত্যন্ত ক্ষতিকর রাসায়ানিক। এগুলোর মধ্যে ৭০টি ক্যানসারের জন্য সরাসরি দায়ী।
গর্ভবতী নারীদের ধূমপানের প্রবণতা থাকলে গর্ভস্থ ভ্রূণ ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো গর্ভবতী নারীর সামনে বা পাশের ঘরে গিয়ে ধূমপান করলেও ওই সন্তানসম্ভবার শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি থেকেই যায়। আপনি ধূমপান করছেন না অথচ সিগারেট জ্বালছে, এ ক্ষেত্রেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যায়। কারণ, সেই ধোঁয়া সরাসরি বাতাসের সঙ্গে মিশছে। আর সেই বাতাস ঘ্রাণের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে (সাইড স্ট্রিম) শ্বাসনালী আর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিশুরা খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। তাছাড়া, শিশুদের শ্বাসনালী আকারেও অনেকটা ছোট। ফলে বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় শিশুদের শ্বাসনালী আর ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছোটদের মধ্যে সর্দিকাশি, ব্রংকাইটিস, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই।
যে সব বাড়িতে এক বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে, তাঁদের আরও বহুগুণ সতর্ক হতে হবে। কারণ, মা, বাবা অথবা বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ধূমপানের কুপ্রভাবে শিশুদের মধ্যে ‘অকাল মৃত্যু’র (Sudden infant death syndrome বা SIDS) ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সব সন্তানসম্ভবা নারী ধূমপায়ী, তাঁদের ক্ষেত্রে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অধূমপায়ীদের থেকে ৫৮% বেশি। একই ভাবে সন্তানসম্ভবার সামনে বা কাছে ধূমপান সদ্যজাতর ‘অকাল মৃত্যু’র আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং সাবধানতা অবলম্বন খুবই জরুরি।
নিকোটিনের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে যাঁরা মোটামুটি অবগত, তাঁরা অনেক সময় শিশুর সামনে ধূমপান না করে বাড়ির বারান্দায়, ছাদে বা বাইরে গিয়ে ধূমপান সেরে আসেন। তার পর শিশুর কাছে যান বা তাকে কোলে নেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এর ফলেও শিশুর শরীরে নিকোটিনের বিষ প্রবেশ করে। ধূমপানের পর জামাকাপড়ে ও ধূমপায়ীর শরীরে বিষাক্ত রাসায়ানিক থেকে যায় কমপক্ষে ঘণ্টা তিন-চারেক। তাই শিশুর থেকে দূরে গিয়ে ধূমপান করে এলেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধূমপান থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুন।
সূত্র : জিনিউজ।
/ এআর /