বিতর্ক নিয়ে জবাব দিচ্ছেন প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা
প্রকাশিত : ০৫:৪৪ পিএম, ৯ জুন ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৮:০৯ পিএম, ৯ জুন ২০১৮ শনিবার
ভারতে বেশ কয়েক দিন থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের এক বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। সেই বিতর্ক আরও জোরদার হয়েছে বৃহস্পতিবার সঙ্ঘের সদর দফতরে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিকে ঘিরে। আর ফের হতাশা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। তার রেশ ধরা পড়েছে প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠার কথায়ও। এতে খুশি আরএসএস। কারণ, তারা এটাই চেয়েছিল। হাওয়া বুঝে আসরে নেমে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী উপদেশ দিতে গেলে শর্মিষ্ঠা পাল্টা বলেন, বাবার সঙ্গে প্রকাশ্যে ভিন্ন মত রাখতে সমস্যা নেই। আমাদের পরিবার গণতান্ত্রিক ও তার্কিক। বাবার থেকেই তা শেখা।
বস্তুত নিজের বক্তৃতায় প্রণব সঙ্ঘকে কী ‘শিক্ষা’ দিলেন, ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই তা মিলিয়ে গিয়েছে! থেকে গিয়েছে ‘মহান সন্তান’ মন্তব্য আর ছবিগুলো। তার মধ্যেও একটা ছবি আবার বিকৃত হয়ে ভাইরাল হয়েছে কাল রাত থেকেই! যা নিয়ে শর্মিষ্ঠা কালই টুইটারে লেখেন, ‘‘ঠিক এই ভয়ই পেয়েছিলাম, বাবাকেও সতর্ক করেছিলাম। কয়েক ঘণ্টাও কাটেনি। বিজেপি-আরএসএসের ‘ডার্টি ট্রিকস’ বিভাগ নেমে পড়েছে!’’
রাজনৈতিক মহলে আজ দিনভর ঘুরে বেড়িয়েছে পুরনো এক প্রসঙ্গও। আট বছর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে, বুরারির প্লেনারি অধিবেশনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশ করেছিলেন প্রণব। মক্কা মসজিদ বিস্ফোরণ-সহ একাধিক ঘটনায় হিন্দু সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির নাম জড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে তার বক্তব্য ছিল, আরএসএস এবং সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্রের তদন্ত হওয়া উচিৎ।
গতকাল সেই আরএসএসের সদর দফতরে গিয়ে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব হেডগেওয়ারকে ‘ভারতমাতার মহান সন্তান’ বলে তার মূর্তিতে ফুল দিয়েছেন প্রণব! যে হেডগেওয়ার হিন্দুরাষ্ট্র তত্ত্বের প্রবক্তা ও মনে করতেন ভারতীয় মুসলিমরা ‘দেশদ্রোহী’!
শুধু মাঝখানে প্রণবকে নিয়ে একটি ছবি বিকৃত করার দায় তাদের ঘাড়ে এসে পড়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে তারা। সঙ্ঘনেতা মনমোহন বৈদ্য জানান, ওই বিকৃতি আরএসএসের কম্মো নয়। বলেন, এ সব বিভাজনকারী রাজনৈতিক শক্তির কাজ। যা শুনে বিরোধীদের ব্যঙ্গ, সঙ্ঘের থেকেও বিভেদকামী এ দেশে কেউ আছে?
প্রণবকে নিয়ে হতাশা স্পষ্ট করে কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেন, আপনি সঙ্ঘের প্রশিক্ষণ শিবির ও তাদের লক্ষ্য নিয়ে সাবধান করেছিলেন। আপনার সময়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। সঙ্ঘ হঠাৎ ভালো হয়ে গেল কী করে? নাকি আমাদের যা বলেছিলেন, তা ভুল!’’
এই অস্বস্তিতে হাসছে বিজেপি-সঙ্ঘ। তাদের অনেকের মত, এর ফলে সঙ্ঘের পক্ষে মূল ধারায় ফেরার পথ যেমন প্রশস্ত হলো, তেমনই মোদি-বিরোধী জোটেও জল ঢালা গেল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণবের বিরুদ্ধে বললে বিজেপি বলত, গাঁধী পরিবারের বাইরের নেতাকে ফের উপেক্ষা করা হচ্ছে।’’ এরই মধ্যে আজ দলে কোণঠাসা লালকৃষ্ণ আডবাণী বলেন, ‘‘প্রণব রাষ্ট্রনায়ক।’’
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার।
এসএইচ/