চয়নিকা চৌধুরী
‘মানুষ আসিফ আকবরের প্রতি আমার অনেক কৃতজ্ঞতা’
প্রকাশিত : ১০:৫৮ এএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৩:২১ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার
তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জামিনের আবেদন করেছেন তার আইনজীবী। রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে।
জামিন আবেদনের ওপর আজই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তবে শুনানির সময় এখনও নির্ধারণ হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তাহেরা বেগম।
এদিকে এই সঙ্গীত শিল্পীকে নিয়ে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন নাট্য নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন-
[সেই ছবি গুলো আজ এভাবে লিখে দিবো কখনই ভাবিনি।
বলা না বলার প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম ঢাকা ক্লাব এ।আব্দুর রহমান ভাই আমার হাজব্যান্ড অরুণ চৌধুরীর বন্ধু।আমাদের পরিবারের বন্ধু।অরুণ চৌধুরী তখন সিনেমার কাজে কোলকাতা। রহমান ভাই নিজে ফোন করে ডেকেছেন,নবীন ভাই ফোন দিয়েছেন, যেতে তো হবেই।
আসলে ৩/৪ দিন একদম ঘুমাতে পারিনি।খুব খুব দমবন্ধ এক কষ্ট হচ্ছিল।এই কষ্ট লিখে, বলে কিছুই বোঝানো যাবেনা।
তানভীর তারেক এর একটা লেখা পড়ে চোখ ভিজে গিয়েছিল।আমি একদম ভালো লিখতে পারিনা।কিন্ত মনে হচ্ছিল কিছু লিখি।
আসিফ আকবর..ভাই..
কোনো একদিন আপনি আমার অনেক বড়,ভয়ংকর এক বিপদ থেকে ধুমকেতুর মত এসে কিছু বুঝে উঠবার আগেই বিপদ মুক্ত করেছিলেন।আমার সেই ছোট মনে ঠিক তখন থেকেই মানুষ আসিফ আকবর বসেছিল।আমি বলবো না যে,গায়ক আসিফ আকবর এর আমি অনেক ফ্যান।কিন্ত মানুষ আসিফ আকবরের প্রতি আমার অনেক কৃতজ্ঞতা।মানুষ আসিফ আকবর কে আমি ভালোবাসি,শ্রদ্ধা করি।কারণ আমি একজন কৃতজ্ঞ মানুষ।
বিপদে আজকাল বেশির ভাগ মানুষ পাশে এসে দাঁড়ায় না।কিন্ত দেখেছি সবার খারাপ সময় আপনি সবার আগে এসে দাঁড়ান। আমি মাঝে মাঝে মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। ভাবতাম,নাহ! এখনো এই সুন্দর পৃথিবীতে ভালো কিছু মানুষের হাত আছে।
যা হয়েছে সত্যি খুব খুব খারাপ হয়েছে।কারণ,আমাদের প্রতি সেগমেন্টে সংগঠন আছে।আমাদের মাথার উপর বড়দের ছায়া আছে।যাই হয়েছিল,সুন্দর করে এক সাথে বড়দের নিয়ে বসে আলাপ করে একটা সিদ্ধান্তে আসাই যেতো!সংগঠন তো এই জন্যই..যা হয়েছে আসলেই ভালো হয়নি।যাই হোক এটার ফল জেল?? জানিনা।আমি তো আর আইনের মানুষ না।যা লিখছি আবেগে লিখছি।
আমরা সবাই যখন এক সাথে কাজ করি,তখন আমাদের সময় গুলো সুন্দর থাকে।কিন্ত কোন কারণে আপসেট হলে আমাদের কেন এগ্রিসিভ হয়ে যেতে হয়?এগ্রিসিভ কাজ কখনই ভালো হয়না।কেনো প্রকাশ্যে সেই প্রিয় মানুষ কে নিয়ে খারাপ কথা বলতে হবে,খারাপ ভাবনা ভাবতে হবে?
আশেপাশের সবাইকে কেনো জানাতে হবে?কৃতজ্ঞতার কথা কেনো ভুলে যেতে হবে?জানিনা!
হ্যা।আমি আশাবাদীর দলে। শফিক তুহিন ভাইর সাথেও আমার সম্পর্ক ভালো।খুব ই ভালো সম্পর্ক। আমরা একসাথে কোয়ান্টাম করেছি।একসাথে আমি তুহিন ভাই,সামিনা আপু লাঞ্চ করেছি।তার অনেক ভালো ভালো গান আমার নাটকে ব্যাবহার হয়েছে।যদি অন্যায় হয়,একসাথে বসা যেতোনা? মানুষের জীবনটা না খুব খুব ছোট।আমরা মাঝে মাঝে প্রিয় মানুষের উপর এমন অবিচার করে ফেলি!!যা না করলেই চলতো।আমরা ভুলে যাই,ধৈর্যই ধর্ম।আসলে এই জীবনের উপর আমাদের কারোর হাত নেই।অসীম ক্ষমতা একমাত্র উপরয়ালার।
কেন জানি মনে হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অশেষ ক্ষমতায়,বড়দের সহযোগীতায়, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সব ঠিক হয়ে যাবে।আসিফ আকবর ভাই বেড়িয়ে আসবেন আমাদের মাঝে!
এই প্রার্থনা।মনে হচ্ছে শফিক তুহিন ভাই আর আসিফ ভাই আবার সব ঠিক করে এক সাথে কাজ করবে।
আসিফ আকবর ভাই, আপনি ভালো থাকবেন।
আসুন আমরা সবাই একটু সহনশীল হই।আমরা একজন আরেকজনকে সম্মান করি।]
(চয়নিকা চৌধুরীর ফেসবুক থেকে সংগ্রহ)
এসএ/