ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ব্যাংক খাতে তদারকি জোরদার করার পরামর্শ আইএমএফের

প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৫:১৯ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার

খেলাপি ঋণের বোঝা অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। তাই বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও তদারকি কার্যক্রম জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশের ‘আর্টিকেল ফোর মিশন’ পর্যবেক্ষণ শেষে এমন মত দিয়েছে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড।

গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রকাশিত সংস্থাটির বার্ষিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে রেগুলেশন বা নিয়মকানুনে ছাড় দেওয়ার প্রবণতা পরিহার করতে হবে।

প্রসঙ্গত, আইএমএফ প্রতি বছর তার সদস্য দেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা করে। সংস্থাটির গঠনতন্ত্রের আর্টিকেল ফোর অনুযায়ী এ পর্যালোচনা হয়। আইএমএফের একটি মিশন এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে এবং সংস্থার পরিচালকরা এর ওপর মতামত দেন।

প্রতিবেদনে ব্যাংক খাত ছাড়াও সরকারের রাজস্বনীতি, অর্থনীতির বিভিন্ন শক্তিশালী দিক এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা করেছে আইএমএফ। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও অস্থিরতার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতি রফতানি ও প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে চলছে। বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে বিনিয়োগ অত্যন্ত প্রয়োজন। রাজস্ব বৃদ্ধি ও সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে কর ব্যবস্থার আধুনিকায়ন জরুরি।

এ ছাড়া নতুন ব্যাংক দেওয়ার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে আইএমএফ। নতুন করে আরও ব্যাংকের লাইসেন্স দিলে তা এ খাতের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

শেয়ারবাজার উন্নয়নে চলমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড। বলেছে, বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে এটি ভূমিকা রাখবে।

আইএমএফের পরিচালকদের পরামর্শ, উচ্চ খেলাপি ঋণ বিশেষত রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ দ্রুত কমিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশনে যেতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদার ও ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উন্নয়ন করতে হবে।

আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংককে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি চালিয়ে যেতে হবে। সংস্কার কার্যক্রম সহায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেটরি ক্ষমতা বাড়াতে হবে।

সংস্থাটি আরও জানাচ্ছে, বাংলাদেশে দৃঢ় মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক শৃঙ্খলা সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করেছে, যা অর্থনীতিকে অনুকূল বাহ্যিক চাহিদা, উচ্চ প্রবাসী আয়, ভোগ্যপণ্যের কম দামের সুবিধা নিতে সাহায্য করেছে। ফলে উৎপাদন, মূল্যস্ফীতি হ্রাস, সরকারি ঋণের মধ্যম অবস্থা ও বাহ্যিক সক্ষমতা পুনর্গঠিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার বিষয়টি মধ্যমেয়াদে বেশ চ্যালেঞ্জিং। তাই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে সামষ্টিক নীতি হালনাগাদের প্রয়োজন হবে।

একে//