ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ইতিহাস গড়তে চাই : সালাহ

প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৭:৩০ পিএম, ১১ জুন ২০১৮ সোমবার

ফুটবল বিশ্বে বর্তমানে মেসি-নেইমার-রোনালদোর পর যে নামটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে তিনি হচ্ছেন মিসরের সালাহ। তিনি লিভারপুলকে ১৩ বছর পর তুলেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। ২৮ বছর পর মিসরকেও বিশ্বকাপের টিকিট পেতে সালাহ রেখেছেন বড় ভূমিকা। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চোট পাওয়ার পর তাঁর বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে ছিল শঙ্কা। তবে সেই শঙ্কা মিটে গেছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ফুটবল বিশ্বকাপের ভাবনা জানিয়েছেন সালাহ। সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন : আপনার চোটের কী অবস্থা? মিসরের হয়ে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে কি আপনি খেলতে পারবেন?

মোহামেদ সালাহ : এখন আমি আগের চেয়ে ভালো আছি। আমি আশা করছি উরুগুয়ের বিপক্ষে মিসরের হয়ে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলতে পারব। তবে সবই নির্ভর করবে ঠিক ম্যাচের আগে আগে আমি কেমন বোধ করছি তার ওপর।

প্রশ্ন : কিয়েভের ফাইনালের রাতটাকে কি দুঃস্বপ্ন বলেই মনে হয়?

সালাহ : একদম। আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ স্মৃতি হচ্ছে কিয়েভের ফাইনালে মাঠ থেকে বের হয়ে আসাটা।

প্রশ্ন : আঘাত পাওয়ার পর কি মনে হয়েছিল যে বিশ্বকাপটাও বুঝি শেষ হয়ে গেল?

সালাহ : যখন মাটিতে পড়ে গেলাম, তখন প্রচণ্ড শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে খুবই উদ্বেগের একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া কাজ করছিল আমার ভেতর। একই সঙ্গে রাগ ও বিষাদের একটা অনুভূতি। প্রথমে মনে হয়েছিল, এই ফাইনালে আমি আর খেলতে পারব না! এরপর আরেকটু মাথাটা পরিষ্কার হলে ভেবেছি বিশ্বকাপটাও হয়তো খেলা হবে না।

প্রশ্ন : সের্হিও রামোস যেভাবে আপনার ওপর পড়ে গিয়েছিলেন, সেটাকে কি স্বাভাবিক মনে হয়েছে?

সালাহ : আমার তো মনে হয় না। হয়তো হতেও পারে?

প্রশ্ন : কিছুদিন আগে রামোস বলেছেন, ‘সে (সালাহ) প্রথমে আমার হাত ধরেছে, আমি যেদিকে পড়েছি, সে তার উল্টো দিকে পড়েছে বলেই অন্য হাতে চোট পেয়েছে।’ এই ব্যাপারে আপনার কী মন্তব্য?

সালাহ : এসব হাস্যকর কথাবার্তা।

প্রশ্ন : এবার বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে আসি। ইউরোপিয়ানদের আপনি কিভাবে বোঝাবেন যে মিসরের জন্য বিশ্বকাপে খেলতে পারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

সালাহ : ২৮ বছর পর এবারই আমরা বিশ্বকাপে খেলছি। এই দীর্ঘ নির্বাসনটা কিন্তু আমাদের জন্য খুব একটা যৌক্তিক নয়, কারণ এই সময়ের ভেতর আমরা সাতবার আফ্রিকান নেশনস কাপ জিতেছি। ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১০—এই তিনবারই আমরা আফ্রিকান নেশনস কাপের চ্যাম্পিয়ন ছিলাম, অথচ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। সেসময় আমরা শুধু বলতাম, ‘আমাদের এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে।’ বহুকাল ধরে আমরা এই সাফল্য অর্জন করতে পারিনি, তাই এই সাফল্যটা খুবই বিশেষ একটা ব্যাপার। হয়তো স্পেনের জন্য প্রথম বিশ্বকাপ জেতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন : বিশ্বকাপে মিসরের লক্ষ্য কী?

সালাহ : আমার তো মনে হয় আমাদের দারুণ একটা দল আছে, সেই সঙ্গে দারুণ একজন কোচ। আমরা পরের রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে চাই এবং ভালো করতে চাই।

প্রশ্ন : আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী?

সালাহ : স্রেফ দলকে সাহায্য করা আর গোল করা। মূল কাজ হবে দলের সবাইকে সাহায্য করা যেন তারা ভালো করতে পারে।

প্রশ্ন : মিসর দলের শক্তির জায়গাটা কী?

সালাহ : এটা বলা কঠিন। তবে আমার মনে হয় আমাদের শক্তির জায়গাটা হচ্ছে আমাদের দলটা এবং আমাদের এই একজোট হয়ে থাকাটা। আমাদের আগের কোচ যেভাবে খেলাতেন, হেক্টর কুপারের অধীনে আমরা তার চেয়ে অন্যভাবে খেলছি। আমরা জমাট, নিরেট একটা দল, সবারই একই লক্ষ্য আর সবাই একে অন্যকে জেতার জন্য সাহায্য করতে চায়।

প্রশ্ন : মিসরের সমর্থকরা তো আবেগপ্রবণ। ভালো খেলার জন্য তাদের কাছ থেকে কি কোনো প্রত্যাশার চাপ আছে আপনাদের ওপর?

সালাহ : চাপ ছিল বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার। তবে হ্যাঁ, এখন যদি কেউ বলে, ‘মূল পর্বে খেলা হয়েছে, আমাদের কাজ শেষ’, তাতে আপত্তির কিছু নেই। তবে আমি সেই দলে নেই। আমরা ইতিহাস গড়তে চাই। বড় কিছু অর্জন করতে চাই। আমার মাথায় চাপ হচ্ছে এখন পর্যন্ত অর্জন করা হয়নি এমন ব্যতিক্রমধর্মী কিছু করার চাপ! শুধু গেলাম, তিনটি ম্যাচ খেললাম আর ধন্যবাদ বলে চলে এলাম এমনটা নয়। আমার মাথায় ওসব নেই।

প্রশ্ন : স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে হতে পারে আপনাকে, সেই সম্ভাবনার কথা কতটা আছে মাথায়?

সালাহ : হতে পারে। স্পেন বা পর্তুগাল, যে কারো বিপক্ষেই খেলতে হতে পারে। তাদের বিপক্ষে খেলাটা কঠিন হবে। তবে কখন কী হয় কিছুই বলা যায় না!

সূত্র : গোলডটকম।

/ এআর /