ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

অর্থাভাবে থমকে আছে শারমিনের পড়াশোনা

প্রকাশিত : ১০:০৮ পিএম, ১২ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১৪ এএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার

শারমিন আক্তার মিম। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ আর এইচএসসিতে জিপিএ-৪.২৫ অর্জন করেন। এর মধ্যে জেএসসি’তে বৃত্তিও পান তিনি। তবে এত ভালো ফলাফলের পরেও থমকে আছে শারমিনের উচ্চ শিক্ষা। দেশের স্বনামধন্য একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও অর্থাভাবে পড়াশুনা বন্ধ রাখতে হচ্ছে শারমিনের।

শারমিন  ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ৩৯৬ নম্বর মেধা তালিকায় অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ভূমি আইন বিভাগে ভর্তি হন শারমিন আক্তার মিম। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রথম সেমিস্টারের ক্লাসও শুরু করেন। তবে দরিদ্র বাবার মেয়ে শারমিনকে ঢাকা শহরে থেকে পড়াশুনার খরচের সাথে হিমশিম খেতে হয়। প্রায় আড়াই মাস আগে ঢাকা ছেড়ে নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘাটকৈর গ্রামে ফিরে যেতে হয় শারমিনবকে।

দেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও শুরু থেকেই হোস্টেল ও আবাসিক সুবিধা বঞ্চিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। যেকারনে ঢাকার বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের এখানে ‘মেস’ আকারে থাকতে হয়। শারমিন জানায়, “এসব মেসে থেকে পড়াশুনা করতে হলে প্রতি মাসে শুধু থাকা আর খাওয়ার জন্যই ছয় থেকে আট হাজার টাকা খরচ হয়। এছাড়াও বই এবং অন্যান্য খরচ তো থাকেই। উপরন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের মেসগুলোতে কমপক্ষে দুই বা তিন মাসের ভাড়া অগ্রিম না দিলে বাসা পাওয়া যায় না। এত টাকা তো আমার নেই”।   

ইটিভি অনলাইনের নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, শারমিনের বাবা জামাল হোসেন রিক্সাচালক আর মা মোরশেদা খাতুন গৃহিনী। শারমিনরা দুই বোন। ছোট বোন শাহারা আফরিন মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। জামাল হোসেন বলেন, “আমার পক্ষে যা সম্ভব ছিল তা দিয়ে মেয়েকে ভর্তি করিয়েছি। প্রতিবেশীরাও সাহায্য করতেন। আর তো পারি না। ছোট মেয়েটার দিকেও খরচ করতে হয়। কেউ যদি আমাদের পাশে এসে দাড়াতো আমার মেয়েটা তাহলে আইনজীবী হতে পারত”।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, “মেয়েটি যে এমন অবস্থায় আছে তা আমরা জানতাম না। মেয়েটি ঢাকা থেকে চলে যাওয়ার আগে আমাদেরকে বিষয়টি অবহিত করতে পারত। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জীবনে সফল হওয়ার নজির আছে। আমরা চেষ্টা করি এসব শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে। আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যারকে অবহিত করলে তিনি মেয়েটির সকল ফি মওকুফ করে দিতে পারেন। এছাড়াও আরও উপায়ে সাহায্য করা যায়। তাই আমি পরামর্শ দেব মেয়েটি যেন ঈদের ছুটির পর ঢাকায় এসে ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করে। আশা করি শারমিনের জন্যও ভালো একটি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে”।

//এস এইচ এস//