ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিশ্বকাপ ফুটবলের সব তথ্য সাতটি চার্টে

প্রকাশিত : ১১:২৬ এএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:২৯ এএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার

জার্মানি কি সত্যি পেনাল্টি নিতে ওস্তাদ? নিজের মাঠে খেলে কি আসলেই কোন সুবিধে পাওয়া যায়? কোন মেক্সিকান ডিফেন্ডার বিশ্বকাপে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর সমান সংখ্যক গোল করেছেন? রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আসুন চটপট জেনে নেওয়া যাক এইসব প্রশ্নের জবাব।  

. যে যে দেশ বিশ্বকাপ জিতেছে

ব্রাজিল হচ্ছে এ তালিকায় সবার ওপরে। তারা বিশ্বকাপ জিতেছে মোট পাঁচ বার। তার মধ্যে শেষবার জিতেছে ২০০২ সালে। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে তারা ছিল স্বাগতিক দেশ। কিন্তু সেই ভয়াবহ সেমিফাইনালটি - যাতে জার্মানি ৭-১ গোলে হারায় ব্রাজিলকে -তাদের যাত্রা থামিয়ে দেয়।

ইউরোপ বা দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে কোনও দেশ এ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জেতেনি। গত তিনটি বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানি, স্পেন আর ইতালি। তার ফলে ইউরোপ বিশ্বকাপ জিতেছে মোট ১১ বার। আর দক্ষিণ আমেরিকা ৯ বার।

. সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন কে

জার্মান গোল মেশিন মিরোস্লাভ ক্লোসা আছেন এই তালিকায় সবার ওপরে। তিনি চারটি বিশ্বকাপে খেলে মোট ১৬টি গোল করেছেন।

তিনি ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। তবে রাশিয়ায় যাচ্ছেন তিনি, জার্মান দলের কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন হিসেবে। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ব্রাজিলের রোনাল্ডো। তিনি বিশ্বকাপে গোল করেছেন ১৫টি। তার মধ্যে আটটিই ২০০২ সালে, যেবার ব্রাজিল শেষ শিরোপা জিতেছিল।

ফ্রান্সের জুস্ত ফঁতেইন হচ্ছেন কোন এক বিশ্বকাপের আসরে সবচেয়ে বেশি গোল করার কৃতিত্বের মালিক। ১৯৫৮-র বিশ্বকাপে তিনি ৬টি ম্যাচ খেলে মোট ১৩টি গোল করেছিলেন।

. এবার যারা খেলছেন তারা বিশ্বকাপে কে কত গোল করেছেন

বিশ্বকাপে ১০টি বা তার বেশি গোল করেছেন এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে শুধুমাত্র জার্মানির টমাস মুলারই এবার রাশিয়ায় খেলবেন।

তালিকার শীর্ষে থাকা তার স্বদেশি ক্লোসার পাশে নাম ওঠাতে হলে মুলারকে এই টুর্নামেন্টে পাঁচটি গোল করতে হবে।

কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড হামেস রডরিগেজ গতবার গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। কাজেই এবারো সে রকম কিছু করতে পারলে তিনিও নিশ্চয়ই সেরাদের কাতারে উঠে যাবেন।

এই তালিকায় স্বাভাবিকভাবেই আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রাই বেশি। কিন্তু এতে ডিফেন্ডারও আছেন একজন - মেক্সিকোর রাফায়েল মার্কুয়েজ।

তিনি এবার তার পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলছেন। মজার ব্যাপার হলো বিশ্বকাপে তিনি যত গোল করেছেন, তা এ যুগের অন্যতম শীর্ষ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর সমান, মাত্র তিনটি।

. বিশ্বকাপের টিমগুলো গোল লক্ষ্য করে আগের মতো শট নিচ্ছে না

প্রতি খেলায় গোল লক্ষ্য করে কতগুলো শট নেওয়া হলো - এর একটা হিসেব করে দেখা গেছে যে ১৯৬৬র পর গত বিশ্বকাপেই ম্যাচপ্রতি শটের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে কম।

এ উপাত্ত দিচ্ছে ওপ্টা, তবে তাদের কাছে ১৯৬৬-র বিশ্বকাপের আগেরগুলোর তথ্য নেই। তবে হ্যাঁ, ২০১৪-র বিশ্বকাপে ম্যাচপ্রতি গোল হয়েছে ২.৭টি করে- যা আবার ১৯৮২র স্পেন বিশ্বকাপের পর সর্বোচ্চ।

দূর থেকে গোল লক্ষ্য করে শট নেওয়াও কমে গেছে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের সঙ্গে গতবারের তুলনা করলে এটা বেশ স্পষ্টই বোঝা যায়।

ব্রাজিলে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ২০টি গোলের মধ্যে বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শট ছিল বাইরে থেকে নেওয়া শটের চেয়ে বেশি। কিন্তু ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ছিল ভেতর থেকে নেওয়া শটের দ্বিগুণ।

. ইংল্যান্ড হয়তো বিশ্বকাপে ভালো করছে না, কিন্তু তাদের প্রিমিয়ার লিগই সবার সেরা

১৯৬৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড একবার মাত্র কোয়ার্টার ফইনাল পর্ব পার হতে পেরেছে। কিন্তু ইংলিশ লিগ ফুটবল এখন ইউরোপের লিগগুলোর মধ্যে আকর্ষণের বিচারে অনেক এগিয়ে।

বিশ্বকাপেও দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দেশের দল ভর্তি প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়। দল ঘোষণার পর এক হিসেবে দেখা যায়, ১৩০ জন খেলোয়াড়এসেছে প্রিমিয়ার লিগসহ বিভিন্ন স্তরের ইংলিশ ক্লাবগুলো থেকে। ৮১ জন ছিলেন স্পেনের বিভিন্ন ক্লাব থেকে, ৬৭ জন জার্মান ক্লাবগুলো থেকে।

ইংল্যান্ড দলে দেখা যাচ্ছে, ইংলিশ লিগে খেলেন না এমন কোনও খেলোয়াড় নেই। আর সুইডেন ও সেনেগাল হচ্ছে মাত্র দুটি দল, যাদের দলে তাদের স্থানীয় লিগে খেলেন এমন কোনও খেলোয়াড়ই নেই।

. স্বাগতিক দেশ কেমন করেছে বিশ্বকাপগুলোয়

ব্রাজিল বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ ছিল দু`বার। দু`বারই তারা ছিটকে গেছে। ১৯৫০ সালে উরুগুয়ের কাছে হেরে, আর ২০১৪ সালে ৭-১ গোলে জার্মানির কাছে হেরে।

তবে অন্য অনেক দেশ বিশ্বকাপে স্বাগতিক হিসেবে খারাপ করেনি। স্বাগতিক দেশ খেলাপ্রতি বেশি পয়েন্ট পায়, এমন দেখা গেছে এক হিসেবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা হচ্ছে একমাত্র দেশ, যারা ২০১০ সালে স্বাগতিক হয়েও প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গেছে।

. পেনাল্টিতে হারার মর্মান্তিক বেদনা

পেনাল্টিতে হেরে বিশ্বকাপ থেকে সবচেয়ে বেদনাদায়কভাবে বিদায় নিয়েছে ইতালি। হেরেছে তিন বার, জিতেছে একবার।

অনেকেরই মনে আছে, ১৯৯৪ সালে রবার্টো বাজ্জিওর পেনাল্টি মিস করার কথা। তবে ২০০৬ সালের ফাইনালে আবার ইতালি কাপ জিতেছিল পেনাল্টিতেই।

পেনাল্টিতে ইংল্যান্ড হচ্ছে বিশ্বকাপে সবচেয়ে খারাপ রেকর্ডধারী। তারা পেনাল্টি শুটআউটে তিনবার হেরেছে, জেতেনিএকবারও।

জার্মানি পেনাল্টি শুটআউটে গেছে চারবার, প্রতিবারই জিতেছে তারা। কোনও জার্মান খেলোয়াড় পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন, এমন হয়েছে মাত্র একবার।

সূত্র: বিবিসি

একে//