ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আমাকে মেসিদের কাতারে রাখা অনুচিত: সালাহ

প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:৪৯ পিএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার

মোহামেদ সালাহ চোটের কারণে বিশ্বকাপ না খেলার যে শঙ্কা ছিল, সেটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন। মিসরের এই তারকা ফুটবলার এখনও পুরোপুরি ফিট না হলেও ধীরে ধীরে ফিরে পাচ্ছেন নিজেকে। আর সালাহর সুস্থ হওয়াটা স্বস্তি দিচ্ছে পুরো মিসরকেই। তার কাছে ভক্তদের প্রত্যাশা অনেক। আর এই চাপটা অনুভব করছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের ভাবনা, মিসরের সম্ভাবনা এবং বিশ্বকাপ খেলতে পারার স্বস্তি নিয়ে কথা বলেছেন এই ফরোয়ার্ড।

প্রশ্ন :নিজের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপকে সামনে রেখে আপনি কতটা রোমাঞ্চিত?

সালাহ :বিশ্বকাপের অংশ হতে পেরে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। বিশ্বকাপে খেলতে পারাটা যে কোনো ফুটবলারের জন্যই স্বপ্ন সত্যি হতে পারার মতো একটা ব্যাপার। ১৯৯০ সালের পর এবারই প্রথম আমরা বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছি। এটা তাই আমাদের জন্য বিশেষ একটা উপলক্ষ। যদি এই দলটাকে নিয়ে বিশ্বকাপে অনেকটা দূর যেতে পারি, তবে আমরা আরও খুশি হবো।

প্রশ্ন :চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে আপনার সঙ্গে একটা দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার ঘটেছিল। এমন কথাও শোনা গিয়েছিল, আপনি বিশ্বকাপে নাও খেলতে পারেন...

সালাহ :ব্যাপারটা আসলেই বেশ দুর্ভাগ্যজনক ছিল। যাই হোক, সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে, আমি বিশ্বকাপ খেলতে রাশিয়ায় আসতে পেরেছি। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমি বিশ্বকাপে অংশ নিতে না পারতাম, তবে দলের জন্য কাজটা কঠিন হতো। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। তিনি আমাকে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং আমার স্বপ্ন সত্যি করেছেন।

প্রশ্ন : আপনাদের গ্রুপে স্বাগতিক দল রাশিয়ার পাশাপাশি উরুগুয়ে এবং সৌদি আরব আছে। পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

সালাহ :নকআউট পর্বে যেতে পারব কি-না, সেই চিন্তার চেয়ে আমি মনে করি গ্রুপ পর্বে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার ব্যাপারে মনোনিবেশ করাটাই এ মুহূর্তে আমাদের জন্য ভালো। আমরা বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি এবং গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে সেই প্রস্তুতি যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিৎ। যদি আমরা সেটা করতে পারি, তবে বাকি সব ঠিক পথে এগোবে। তবে একই সঙ্গে এত বড় আসরটাকে উপভোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন :নিজেদের প্রথম ম্যাচে আপনারা উরুগুয়ের মুখোমুখি হবেন, বিশ্বকাপে যাদের ব্যাপারে প্রত্যাশা অনেকখানি...

সালাহ : তারা দু`বার বিশ্বকাপ জিতেছে, ২০১০ সালে সেমিফাইনাল খেলেছে। লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানির মতো দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে তাদের দলে। তাদের খেলা যতটুকু দেখেছি, তা থেকে মনে হয়েছে, তারা প্রতিপক্ষকে খুব বেশি সুযোগ দেয় না। আমার মনে হয়, ম্যাচটা আমাদের জন্য কঠিন হবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে। একই সঙ্গে আমরা যদি আগে গোল করতে পারি, তবে আমাদের রক্ষণ ভাঙাটাও তাদের জন্য অনেক কঠিন হবে।

প্রশ্ন :অনেকের মতেই লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাদের মতো আপনিও এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম বড় আকর্ষণ। এই ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখেন?

সালাহ : তারা সবাই কিংবদন্তি পর্যায়ের ফুটবলার। সফলতা এবং তারকা খ্যাতি বিবেচনায় আমি এখনও তাদের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি। ঈশ্বরের কৃপায় ইউরোপের পেশাদার ফুটবলে আমি পথচলা শুরু করেছি এবং সামনে আরও বেশ কিছু বছর এই পথে থাকতে চাই। অন্যদিকে যাদের কথা বললেন, তারা ইতিমধ্যে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। মেসি, রোনালদো এবং নেইমার রাশিয়ায় বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে যাবে। আর ইনিয়েস্তা নিজের নামের পাশে আরেকটা বিশ্বকাপ ট্রফি যোগ করার চেষ্টা করবে। এটা আমার প্রথম বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। তাই তাদের সঙ্গে একই কাতারে আমাকে রাখাটা অনুচিত।

প্রশ্ন :বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শেষ ম্যাচে আপনারা ঘানার বিপক্ষে খেলেছিলেন, আফ্রিকা অঞ্চল বিশ্বকাপে খেলার ব্যাপারে তারা ফেভারিট ছিল...

সালাহ :নিজেদের দেশে চমৎকার খেলে আমরা তাদের হারিয়েছিলাম এবং তাদের মাটিতে গিয়ে ড্র করেছিলাম। এর ফলে আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হই এবং বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করি। সেই গ্রুপে উগান্ডা এবং কঙ্গোও ছিল, গ্রুপটা সহজ ছিল না। আমরা কেবল উগান্ডার কাছে হেরেছিলাম।

প্রশ্ন :আপনার চোখে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফেভারিট কে?

সালাহ : প্রথমত, বিশ্বকাপের আগে আমরা এখন সবাই নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। দ্বিতীয়ত, বিশ্বকাপে যেহেতু ভালো খেললেও শিরোপা জয়টা অনিশ্চিত, তাই ভবিষ্যদ্বাণী করার কোনো মানে হয় না। তবে বড় দলগুলো অবশ্যই আরও একবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চাইবে।

প্রশ্ন :বিশ্বকাপে এটা মিসরের তৃতীয় অংশগ্রহণ। ঘটনাক্রমে এর আগে যে দু`বার (১৯৩৪ ও ১৯৯০) মিসর বিশ্বকাপে খেলেছে, দুটি বিশ্বকাপেরই স্বাগতিক দেশ ছিল ইতালি। অথচ এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে সেই ইতালিই নেই। এ ব্যাপারটা কীভাবে দেখছেন?

সালাহ : ইতালি বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি। অথচ তারাই বিশ্বকাপে খেলতে পারছে না। ইতালির ফুটবল সমর্থকদের জন্য এটা খুব হতাশার। চিলি ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থকদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। তবে আমাদের সমর্থকরা বিশ্বকাপকে যতটা সম্ভব রঙিন করার চেষ্টা করবে। ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছি আমরা, আমাদের সমর্থকদের আনন্দ সীমাহীন।

এসএইচ/