বাণিজ্য যুদ্ধে পাল্টা হানা বেইজিংয়ের
প্রকাশিত : ১০:১৭ এএম, ১৭ জুন ২০১৮ রবিবার
যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই শুক্রবার প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছিল বেইজিং। চব্বিশ ঘণ্টাও পার হল না। করের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার জন্য মার্কিন পণ্যের নিশানা ঠিক করে ফেলল তারা। জানিয়ে দিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে অটল থাকলে, ৬৫০টিরও বেশি মার্কিন পণ্যে ২৫% হারে শুল্ক চাপাবে তারা।
চিনা পণ্যের উপর চড়া আমদানি শুল্ক চাপানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে কটাক্ষে ভরিয়ে দিতে ছাড়েনি চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম। তাদের বক্তব্য, বুদ্ধিমানরা সেতু তৈরি করেন। আর দেওয়াল তোলেন বোকারা। ইঙ্গিত কার দিকে, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য বক্তব্যে অনড়। তাদের দাবি, অবাধ বাণিজ্যের নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করে না চীন। চাপ খাটিয়ে ও নিয়ম ভেঙে হাতিয়ে নেয় সে দেশে ব্যবসা করা মার্কিন সংস্থার মেধাস্বত্ব (পেটেন্ট)। স্থানীয় সংস্থাকে বাধা দেয় না মেধাস্বত্ব ভেঙে পণ্য তৈরিতে। সঙ্গে রয়েছে উঁচু শুল্ক-প্রাচীরও। এই সমস্ত কারণেই চিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি অন্তত ৩৭ হাজার কোটি ডলার। যার মাসুল গুনে ফি বছর ২০ লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরিই হয় না মার্কিন মুলুকে।
উল্টো দিকে বেইজিংয়ের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্তের জবাব দিতে তৈরি তারা। অবাধ বাণিজ্যে দেওয়াল তুলছে আসলে ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রই। তাই নিজেদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে, চুপ করে বসে থাকবে না তারা।
২০২৫ সালের মধ্যে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরিতেও আরও বড় শক্তি হয়ে ওঠার পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। যার মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টরও। ট্রাম্প প্রশাসনের তালিকা থেকে স্পষ্ট, আগে ওই সমস্ত পণ্যকে শুল্ক বসানোর জন্য নিশানা করেছে তারা। যা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ বেইজিং। তারা মনে করে, ওই শিল্পে তাদের অগ্রগতি ঠেকাতেই ট্রাম্পের ওই কারসাজি। উল্টো দিকে, চীন যে ৬৫০টি মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সয়াবিন থেকে শুরু করে গাড়ি— প্রায় সমস্ত কিছুই। এমনকি তার মধ্যে রয়েছে গলদা চিংড়ি সমেত বিভিন্ন সামুদ্রিক খাবারও। যে কারণে অনেকে রসিকতা করে বলছেন, আমেরিকা-চিনের বাণিজ্য যুদ্ধে কপাল পুড়বে চিনা খাদ্য রসিকদেরও।
তবে এর মধ্যে সামান্য হলেও আশার দরজা খুলে রেখেছে দুই দেশ। যেমন, গোড়ায় ৫ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে ট্রাম্প শুল্ক বসানোর কথা বললেও, আদপে সেই অঙ্ক কমে দাঁড়াচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভির মতো কিছু পণ্য। তেমনই ওয়াশিংটন কিছুটা নরম হলে, ফের আলোচনার টেবিলে বসার আলগা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে বেইজিংও। বাণিজ্য যুদ্ধের এই দামামার মধ্যে শেয়ার বাজার ও সারা বিশ্বের কাছে আশার খবর সেটুকুই।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//