জাতীয় অধ্যাপক হলেন তিন শিক্ষাবিদ
প্রকাশিত : ১০:১০ পিএম, ১৯ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৪৮ এএম, ২০ জুন ২০১৮ বুধবার
জাতীয় অধ্যাপক বাংলাদেশের বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, যা বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণার জন্যে দেশের বিশিষ্ট সুনামধারী শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও গুণী ব্যক্তিদের দিয়ে থাকে। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই সম্মাননা খেতাব দেয়া হচ্ছে। সাধারণত পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্তি পেয়ে থাকেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে মেয়াদ আরও দীর্ঘ হতে পারে। পুনর্নিয়োগের ব্যবস্থাও আছে। জাতীয় অধ্যাপকদের কিছু শর্ত মানতে হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচিত জাতীয় অধ্যাপকরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্য ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।
এর আগে গত ৩ জুন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচনী কমিটির সভায় অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিতে এ তিনজনের নাম সুপারিশ করা হয়। নির্বাচিত শিক্ষাবিদদের প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি তাদের জাতীয় অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিলেন।
জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচন কমিটির সভাপতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে পাঁচজন শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জুনে। এই অধ্যাপকদের মধ্যে ড. শায়লা খাতুন ছাড়া সবাই প্রয়াত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত:একসঙ্গে সর্বোচ্চ চার শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে যারা নিয়োগ পান তারা সরকারের দেয়া নির্ধারিত হারে সম্মানী ভাতা পান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে তারা এ ভাতা পাবেন। তারা ইচ্ছানুযায়ী কোনো গবেষণা সংস্থা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে নিজের পছন্দমতো ক্ষেত্রে গবেষণামূলক কাজ করতে পারবেন। তবে যে ক্ষেত্রে কাজ করবেন তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে জানাতে হবে। তারা যে শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত থাকবেন সে প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের শিক্ষা বা গবেষণামূলক কাজের বার্ষিক প্রতিবেদন দেবেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে তাদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাবে। তারা যে শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকবেন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা বা গবেষণামূলক কাজ করার সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
এ পদে থাকাকালীন তাদের যেসব বই-পুস্তক ছাপানো হবে, তা থেকে পাওয়া সব সুযোগ-সুবিধা তারা নিতে পারবেন। তারা সরকারের অনুমতি নিয়ে বিদেশে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করতে পারবেন। জাতীয় অধ্যাপক পদে থাকাকালীন তারা অন্য কোনো বেতনভুক্ত চাকরি করতে পারবেন না। যদি করেনও তবে ওই চাকরি থেকে কোনো বেতন বা আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তারা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন না।
জাতীয় অধ্যাপক (নিয়োগ, শর্তাবলী ও সুবিধা) সিদ্ধান্তমালা ১৯৮১ (সংশোধিত) অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগে বাছাই করে। শিক্ষামন্ত্রী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক মন্ত্রী ও সাবেক জাতীয় অধ্যাপক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষাবিদদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সিদ্ধান্ত ও মনোনয়ন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দেন।
আরকে//