অতিরিক্ত ওজন কমাতে বেছে নিবেন যে খাবারগুলো
প্রকাশিত : ০৬:০৩ পিএম, ২৩ জুন ২০১৮ শনিবার
অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তা, নিয়মিত জিমে যাওয়ারও সুযোগ পান না, এমন পরিস্থিতিতে থাকা স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির নিয়মিত হাঁটাহাঁটি তো করতেই হবে, সেই সঙ্গে প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে নির্দিষ্ট কিছু খাবার। যা শরীরের মেদ তো ঝরাবেই, সেই সঙ্গে কমাবে শরীরের ওজন।
১. সবজির রস: আদা, গাজর অথবা করল্লার রস প্রতিদিন খালি পেটে খাওয়া শুরু করলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ এই সবজিগুলির ভিতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান হজম ক্ষমতার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটলে শরীরে মেদ জমার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়।
২. আপেল: অতিরিক্ত ওজনের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে নিয়মিত একটা করে আপেল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। কারণ এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার। তাই তো খালি পেটে একটা করে আপেল খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমে। আর কম পরিমাণে খাবার খাওয়ার কারণে ওজনও কমে দ্রুত।
৩. বাঁধাকোপি: দ্রুত ওজন যদি কমাতে হয়, তাহলে প্রতিদিনের ডায়েটে বাঁধাকোপিকে রাখতে ভুলবেন না। এই সবজিটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের ভিতরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে বহুক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার প্রবণতা একেবারে কমে যায়। আর কম খেলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।
৪. গোলমরিচ: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত যে ওজন কমাতে বাস্তবিকই গোলমরিচের কোনও বিকল্প হয় না। প্রতিদিন লেবুর রসে অল্প পরিমাণ গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া শুরু করলে শরীরের চর্বি গলতে থাকে। ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে যেতে সময় লাগে না। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, তা হল ভুলেও গোলমরিচ মেশানো কোনও পানীয় সকালে খালি পেটে খেতে যাবেন না ।
৫. মধুর সঙ্গে লেবু: চটজলদি রোগা হওয়ার সবথেকে সহজ এবং কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি কী যদি প্রশ্ন করেন, তাহলে মধু এবং লেবুকে বাদ দিয়ে কোনও কিছু ভাবা বাস্তবিকই সম্ভব নয়। আসলে মধু এবং লেবুর ভিতরে উপস্থিতি একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেলা দেখায় যে একদিকে দেহের ভিতরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে খিদেও কমে। ফলে ওজন হ্রাস পেতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে পরিমাণ মতো লেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে পানীয়টি প্রতিদিন খালি পেটে খাওয়া শুরু করতে হবে। তাতেই ওজন কমতে থাকবে।
৬. বিটরুট: নিয়মিত বিটরুট খাওয়া শুরু করলে শরীরের ভিতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যে তার প্রভাবে একদিকে যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, তেমনি ক্যান্সারের মতো মরণ রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। শুধু তাই নয়, শরীরকে বিষ মুক্ত করতেও এই সবজিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. ওটস মিল: এক চামচ ওটস মিলের সঙ্গে তিন চামচ পানি, এই রেশিয়োতে বানিয়ে নিয়মিত সকালবেলা খালি পেটে খাওয়া শুরু করলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ এই খাবারটিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, বরং কমতে শুরু করে। ওটস মিলে লেসিথিন নামক একটি উপাদান থাকে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. বাদাম: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানে উপস্থিত ফাইবার, উপকারি ফ্যাট এবং ওমাগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড একদিকে যেমন খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, তেমনি ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকেও ত্বরান্বিত করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।
৯. পেঁপে: এই ফলটির ভিতরে রয়েছে পেপেইন নামক একটি উপাদান, যা ফ্যাট গলিয়ে মেদ ঝরাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান এবং অতিরিক্ত পানিকে বের করে দিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে খালি পেটে যদি অল্প করে পেঁপে খাওয়া যায়, তাহলে আরও দ্রুত ওজন হ্রাস পেতে শুরু করে। কারণ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। ফলে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা হ্রাস পায়।
১০. ব্রকলি: জর্জিয়া স্টেট ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক স্টাডিতে দেখা গেছে ব্রকলির মতো ডায়াটারি ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি বেশি করে খেলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ এই উপাদানটি শরীরে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম ক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি পায় যে শরীরে মেদ জমার সুযোগই পায় না। রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল এবং হার্টের রোগের মতো সমস্যাকে দূরে রাখতেও ফাইবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আরকে//