ভোটের হাওয়া সুবিধার মনে হচ্ছে না: হাসান সরকার
প্রকাশিত : ০৪:১৯ পিএম, ২৪ জুন ২০১৮ রবিবার
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে ফের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। আজ রোববার সকালে টঙ্গী এলাকার নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শেষ মুহূর্তের আবহাওয়া সুবিধার মনে হচ্ছে না। ‘খুলনার কায়দায়’ গাজীপুরে নির্বাচন হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
হাসান সরকার বলেন, অত্যন্ত বিশ্বস্ত বিশেষ মাধ্যমে আমি অবহিত হয়েছি, খুলনা রেঞ্জের পুলিশদেরকে গাজীপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আনা হয়েছে… খুলনায় যে কায়দায় যে কৌশলে নির্বাচন করা হয়েছে, সেভাবে এখানে সম্পন্ন করার জন্য। সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে বোঝানোর জন্য পুলিশের মাধ্যমে বিএনপির এজেন্টদের মধ্যে লোক ঢোকাবে। ভোট গণনা শেষ হয়ে গেলে পরে বের হয়ে যাবে।
নিজের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাসান সরকার বলেন, নির্বাচন তো বহুদিন ধরে করি। দাদার নির্বাচনটা করতে পারি নাই। বাপের নির্বাচন করেছি, জেঠার নির্বাচন করেছি, ভাইয়ের নির্বাচন করেছি, আমার নির্বাচনও করেছি। সহকর্মীদের নির্বাচন করেছি। বাংলাদেশে নির্বাচনে যে কয়জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বেঁচে রয়েছেন, তাদের একজন আমি।
এই নির্বাচনকে জীবনের শেষ নির্বাচন উল্লেখ করে হাসান সরকার বলেন, সামান্যতম সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো। এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে জীবনের শেষ নির্বাচনটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।
প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে প্রশাসনের সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে হাসান সরকার বলেন, পুলিশের গাড়িতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘুরছে, পত্রিকায় ছবি ছাপা হয়েছে।
এ সময় দুটি জাতীয় দৈনিকের ছবি দেখিয়ে হাসান সরকার বলেন, আমাদের লোকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, কাউকে নরসিংদী পাঠানো হচ্ছে, কাউকে ঢাকা, কাউকে নারায়ণগঞ্জ পাঠানো হচ্ছে। কারো এখনো পর্যন্ত হদিসই পাই নাই। তারপরও নির্বাচনে আছেন এবং থাকবেন বলে জানান বিএনপির এই প্রার্থী।
গাজীপুরে ‘গুরুত্বপূর্ণ’এই নির্বাচনে তিনি ‘শেষ মুক্তিযোদ্ধা’হতে পারেন মন্তব্য করে ৭০ বছর বয়সী হাসান সরকার বলেন, দেশে ও সমাজে বেঁচে থাকা যায় দুভাবে। একটি হল সুনামের সঙ্গে, আরেকটি ঘৃণার সঙ্গে।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমি আহ্বান জানাই, আমরা যেন গর্বিত হয়ে রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে বেঁচে থাকতে চাই।
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ভোট কেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য যখন যাই, তখন জানতাম না বেঁচে থাকব কি-না। জীবনের শেষ সময়ের নির্বাচনে আমি সুযোগ চাই।
হাসান সরকার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশনেত্রী জেলে আছে। দেশনেত্রীকে মুক্ত করা এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন। যত ঝড়-বৃষ্টি-বাধা আসুক না কেন, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন। মহৎ উদ্দেশ্য সাধন করতে হলে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। গাজীপুরবাসী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা সেই ত্যাগ করবে।
খুলনা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেকের কাছে পরাজিত হন বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জুর। বিএনপির অভিযোগ ওই নির্বাচনে প্রশাসন ব্যবহার করে কারচুপি করেছে আওয়ামী লীগ। সরকার এখন গাজীপুরেও ‘খুলনা স্টাইলে’ভোট করতে চাইছে বলেও গত কয়েক দিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন, টঙ্গী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম শুক্কুর, হেফাজত ইসলামের মুফতি নাসির উদ্দিন, যুবদল নেতা প্রভাষক বশির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
/ এআর /