অ্যাপল-স্যামসাং যুদ্ধের সমাপ্তি
প্রকাশিত : ০৩:০৬ পিএম, ২৮ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার
প্রযুক্তি জগতের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে আইফোনের পেটেন্ট নিয়ে অ্যাপল ও স্যামসাং-এর মধ্যবর্তী আইনি যুদ্ধ। অবশেষে গতকাল বুধবার সাত বছরের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে। আদালতে সমঝোতার কথা বলেছে দুটি প্রতিষ্ঠান। নিজেদের মধ্যে অপ্রকাশিত অর্থের বিনিময়ে ওই মামলার সমঝোতা করার কথা বলা হয়েছে।
২০১১ সালে আইফোনের নকশা নকলের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে গত মাসে স্যামসাংকে দোষী সাব্যস্ত করেন ফেডারেল আদালতের বিচারক। সেইসঙ্গে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অ্যাপলকে ৫৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর প্রযুক্তিবিশ্বের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতার খবর এল।
এ মামলার রায়কে অ্যাপল বড় ধরনের জয় মনে করছে। কারণ প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে এসেছে যে অনন্য নকশা আইফোনে সাফল্যের অন্যতম হাতিয়ার।
আদালতে তারা যুক্তি দিয়ে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, আইফোনের গুরুত্বপূর্ণ নকশার পেটেন্ট ভেঙেছিল স্যামসাং।
ইউএস ডিসট্রিক্ট কোর্টের বিচারক লুসি কোহ বলেছেন, দুই পক্ষই যেহেতু মামলার বিষয়টি সমঝোতা করে ফেলেছে, তাই এ মামলাসংক্রান্ত সব দাবি খারিজ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে অ্যাপলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মামলাটি অর্থের চেয়ে বেশি কিছু ছিল। অ্যাপলের অনেক কর্মীর কঠোর পরিশ্রমের উদ্ভাবন সুরক্ষার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে পেটেন্ট লঙ্ঘনের মামলা করেছিল মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। ওই মামলায় স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে আইফোন ডিভাইসের পাঁচটি পেটেন্ট, নকশা ও ট্রেডমার্ক নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়। ২০১২ সালের এক রায়ে আদালত ক্ষতিপূরণ হিসেবে অ্যাপলকে ১০৫ কোটি ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেন স্যামসাংকে। ওই রায়ের পর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমাতে আপিল করে স্যামসাং। অন্যদিকে, স্যামসাংও তাদের কিছু ওয়্যারলেস প্রযুক্তি অবৈধভাবে অ্যাপল ব্যবহার করছে বলে দাবি করলেও বিচারকদের দৃষ্টিতে অ্যাপল কোনো পেটেন্টই ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ব্যবহার করেনি। পরবর্তী সময়ে আপিলের রায়ে বিচারক লুসি কোহ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমিয়ে নির্ধারণ করেন। তারপরও নিষ্পত্তি হয়নি মামলাটির। পুনরায় নির্ধারিত জরিমানার পরিমাণ কীভাবে গণনা করা হয়েছে, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। জরিমানার অর্থ কমানো বিষয়ে অ্যাপলের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত রুল জারি করলে তা নিয়ে আবারও একটি শুনানির প্রয়োজন দেখা দেয়। এর আগে স্যামসাংয়ের দাবির মুখে উচ্চ আদালতের বিচারক চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না করেই মামলাটি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি নিম্ন আদালতে স্থানান্তর করেন। অন্যদিকে, অ্যাপল যে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করে, তা একটি আইফোন মডেল থেকে আয়ের ওপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়।
একে//