স্মরণকালের ভয়াবহ দূষণে হালদা নদী
প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ২৯ জুন ২০১৮ শুক্রবার
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর দূষণ ‘স্মরণকালের ভয়াবহ’ রূপ নিয়েছে। ঢলে ভেসে আসা শিল্পবর্জ্য মিশে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে হালদা নদী রক্ষা কমিটি।
শুক্রবার বন্দরনগরী চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নদীর এ ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। এ সময় হালদা রক্ষা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মনজুরুল কিবরিয়া, কমিটির উপদেষ্টা সাংবাদিক শামসুল হক হায়দারী, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, রেজা মুজাম্মেল, আমিন মুন্নাসি সংবাদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হালদা নদীর এ পরিস্থিতিকে ‘অশনি সংকেত’ মন্তব্য করে মনজুরুল কিবরিয়া জানান, টানা কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি ও পাহড়ি ঢলের কারণে শিল্পবর্জ্য মিশে দূষিত হচ্ছে হালদা। আশপাশের বসতিতে এ শিল্পবর্জ্য ঢুকে পড়ায় পুকুরের মাছ মরে যাচ্ছে, ফসলী জমি নষ্ট হচ্ছে। গত ১৯ জুন রাত থেকে এই দূষণ শুরু হয়। এরপরের দুইদিন হালদা এবং এর অববাহিকার বিলগুলোতে ব্যাপক হারে মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
নদীর বিভিন্ন অংশের পানির নমুনা সংগ্রহ করার পর তা পরীক্ষা করে অক্সিজেনের মাত্রা কম ও অ্যামোনিয়ার মাত্রা ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, প্রতি লিটার পানিতে স্বাভাবিকভাবে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ থাকে অন্তত পাঁচ মিলিগ্রাম। কিন্তু সংগ্রহ করা পানির নমুনায় অক্সিজেনের মাত্রা পাওয়া গেছে শূন্য দশমিক ২১ থেকে এক দশমিক শূন্য মিলিগ্রাম পর্যন্ত। আর হালদার পাশের খন্দকিয়া খালে দ্রবীভূত অ্যামোনিয়া পরিমাণ স্বাভবিকের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি।
দ্রবীভূত অক্সিজেন কমার পাশাপাশি ও অ্যামোনিয়ার বিষক্রিয়াই হালদা নদীতে মাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।
হালদা নদী রক্ষা কমিটির এই সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত মতামত গ্রহণের মাধ্যমে দূষণ ও বিপর্যয়ের সঠিক কারণ উদঘাটন ও হালদাবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
হালদা নদী রক্ষার স্বার্থে আবাসিক এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এসটিপি স্থাপন করা ছাড়াও ‘বামনশাহী খাল পুনঃখনন করে অনন্যার মাস্টার ড্রেনেজ সিস্টেমকে বামনশাহী ও কুয়াইশ খাল থেকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলা হয় সুপারিশে।
আরকে//