ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বিটের রসে জাদু আছে

প্রকাশিত : ০৩:১০ পিএম, ৩০ জুন ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৩:১৪ পিএম, ৩০ জুন ২০১৮ শনিবার

বিটের রস খাওয়া উপকারী, তা তো বুঝলাম। কিন্তু  সুস্থ অবস্থায় তা কি কারও মুখে রুচবে?  কিন্তু অসুস্থ হলে? হার্ট ফেলিওরে জেরবার হয়ে, গৃহবন্দী থাকতে হলে? অল্পস্বল্প ব্যায়াম না করলে এ কষ্টের হাত থেকে মুক্তি নেই জানেন, কিন্তু সে ধকল নিতেই পারছেন না। এদিকে তেমন ওষুধও নেই যে,  সে কাজে সহায়তা করে— তা হলে?

ধরা যাক, প্রেশার বেড়েছে৷ ওষুধ, ব্যায়াম ও লবণের কড়াকড়ির সঙ্গে ডাক্তার বললেন, এক গ্লাস বিটের রস খেতে৷ তার গুণপনার লিস্ট দিলেন৷ সে পুষ্টির জোগান দেয়, শক্তি  বাড়ায়, প্রদাহ কমিয়ে ইস্কিমিক হৃদরোগ, এমনকী ক্যান্সার ঠেকাতেও কাজে আসে৷ তখন?

হার্ট ও বিট

প্রথমে বলি হার্ট ফেলিওরের কথা৷ রোগ বেড়ে গেলে একটুতেই হাঁফ ধরে যায়৷ ব্যহত হয় স্বাভাবিক জীবনযাপন৷ ওষুধপত্র খেয়ে ও নিয়ম মেনেও অনেক সময় এই অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয় না৷ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন বিটের রস খেতে শুরু করার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এ অবস্থার অনেক উন্নতি হয়৷ ২০ জন বয়স্ক ও হাই প্রেশার–হার্ট ফেলিওরে ব্যতিব্যস্ত মানুষকে ৪ সপ্তাহ ধরে দিনে এক বোতল করে বিটের রস খাইয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে অধিকাংশেরই হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করার ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ৷ রক্তচাপও কমেছে কিছুটা৷

রক্তের সি–রিয়েকটিভ প্রোটিন মেপে বোঝা যায় ইস্কিমিক হৃদরোগ হয়েছে কি-না, ইন্টারলিউকিন–৬ বা টিউমার নেক্রোসিস ফ্যাক্টর আলফা বাড়লে ক্যান্সারের চান্স থাকে৷ বিটের প্রধান উপাদান বিটেইন এই সমস্ত মার্কারের পরিমাণ কমিয়ে রাখে৷

বিটের আরও গুণ

১.ব্যায়ামের আগে এক গ্লাস বিটের রস খান৷ প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি সময় ধরে ব্যায়াম করতে পারবেন৷

২. বিটের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট নামের উপাদানেরা ক্যান্সার ঠেকাতে কাজে লাগে৷ প্যানক্রিয়াস, ব্রেস্ট ও প্রস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিটের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে৷

৩. বিটে আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কারিগর ভিটামিন সি, পর্যাপ্ত ফাইবার, সুস্থ স্নায়ু ও পেশির কারিগর পটাশিয়াম, হাড়–লিভার–কিডনি– সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজ৷ এ ছাড়া ভিটামিন বি ও ফোলিক অ্যাসিড৷

৪. শরীরকে বিষমুক্ত করার কাজে সহায়তা করে বিটেইন৷ ভাল থাকে রক্ত ও লিভার৷

৫. বিটের চেয়ে বেশি গুণী বিট শাক৷ প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ফাইবার ও আয়রনে সমৃদ্ধ৷ খেতেও একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয়৷

এক নজরে

১. বিটের রস খাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিস্টোলিক রক্তচাপ  ৪–৫ পয়েন্ট কমে যায়৷

২. শরীরচর্চা করার আগে এক গ্লাস খেলে সামর্থ বাড়ে৷

৩. নিয়মিত খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷

৪. হৃদরোগ ও ক্যান্সার ঠেকাতে এর ভূমিকা আছে৷

৫. হৃদরোগের প্রকোপ কমাতেও বিট বেশ কার্যকর৷

৬. বিটে আছে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি৷ কাজেই লিমিট রেখে না খেলে ওজন বাড়তে পারে৷

 

কম ঘুমিয়ে বেশি কাজ, আসলে অ–কাজ।

কিছু মানুষ আছেন, যারা দিনের পর দিন ৩–৪ ঘণ্টা ঘুমিয়েও সব কিছু খুব ভালভাবে সামলাতে পারেন৷ সেই হিসেব মাথায় রেখে যদি ভাবেন, ঘুমিয়ে সময় নষ্ট না করে আপনিও তাই করবেন, প্রথম দিকে কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে বা বেশি কষ্ট হলে সপ্তাহান্তে তা পুশিয়ে নেবেন, ভুল করবেন৷ কারণ কম ঘুমিয়ে সব দিক বজায় রাখতে পারেন তারাই যাদের কম ঘুমোনোর ধাত৷ এটা যার আছে, তার আছে৷ না থাকলে চেষ্টা করে খুব একটা কিছু করা যায় না৷ কাজেই তাদের শরীর–মন–মেজাজ সব ঠিক রাখতে দিনে ৬–৮ ঘণ্টা নিশ্ছিদ্র ঘুম দরকার৷ না হলে কম ঘুমের প্রভাব পড়ে শরীর জুড়ে৷ শরীর–স্বাস্থ্য–মন সব ছন্নছাড়া হয়ে যায়৷ শরীরে বসে যায় স্ট্রেস হরমোনের মেলা৷ তার হাত ধরে কিছু অসুখ–বিসুখ ডালপালা মেলে, যার মধ্যে কয়েকটি যথেষ্ট জটিল৷ কাজেই শরীর যতটুকু চায় ততটুকু ঘুমান, কার্পণ্য করবেন না৷

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//