রাবিতে ফের কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা
প্রকাশিত : ০৭:১১ পিএম, ২ জুলাই ২০১৮ সোমবার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পতাকা মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে। এরমধ্যে তরিকুল ইসলাম তারেক নামের একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নেওয়া হয়েছে।
আহত তরিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলন রাবি শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধরে তার ডান পা ভেঙ্গে গেছে ও মাথা ফেটে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি রামেকের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকাল ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০-৪০জন শিক্ষার্থী পতাকা মিছিল বের করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বেতার মাঠ থেকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের দিকে আসছিল। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আগে থেকেই রাবি ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে প্রায় ৬০-৭০ জন নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছিল। আন্দোলনকারীরা প্রধান ফটকের কাছে আসতেই তাদের ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালানোর চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। পিছন থেকে তাদেরকে পেটাতে থাকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এসময় মহাসড়কে তারিকুল ইসলাম পড়ে গেলে তার ওপর চড়াও হয়ে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান সিনহা, সাংগঠনকি সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু, সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কর্মী লতিফুল কবির মানিকসহ কয়েকজন। পরে পুলিশ এসে তারেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হামলার সময়, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, মাহফুজুর রহমান এহসান, রফিকুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন সারোয়ার, আহমেদ সজীব প্রমুখ উপস্থি ছিলেন। কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাতে রামদা দেখা যায়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে পুলিশের সামনেই মারধর করে। পুলিশ নিরব দর্শকের মতো তাদের হামলা দেখেছে। এতে আমাদের ১২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ আমরা তাদের মারধর করিনি। তারা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল করার চেষ্টা করছিল তাই তাদের প্রতিহত করেছি।’
প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে আসছিল। এসময় ছাত্রলীগ ও তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় একজন আহত হয়েছে শুনেছি।’
এসএইচ/