ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

স্ট্যান্ডআপ কমেডি বিনোদনের বড় মাধ্যম হতে পারে: আবু হেনা রনি

প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ৪ জুলাই ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৪:৪৭ পিএম, ৪ জুলাই ২০১৮ বুধবার

স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আবু হেনা রনি। কলকাতার দর্শকপ্রিয় কমেডি শো ‘মীরাক্কেল’-এর সুবাদে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন টেলিভিশন শো, নাটক, সিনেমার কাজ নিয়ে। বিজ্ঞাপনচিত্রেও দেখা গেছে এই কমেডিয়ানকে। একুশে টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘একুশের সকাল’-এ অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানে কৌতুক অভিনেতা রনি জানালেন অনেক অজানা কথা।

তাকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন- সোহাগ আশরাফ

আবু হেনা রনিকে এদেশের দর্শক একজন কমেডিয়ান হিসেবে চিনলেও বর্তমানে তিনি মিডিয়ার বেশ কয়েকটি মাধ্যমে কাজ করছেন। বর্তমানে দুটি টিভি উপস্থাপনা করছেন রনি। এছাড়া দেশে এবং দেশের বাইরে স্ট্যান্ডআপ কমেডি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে তার। একই সঙ্গে সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। যা এখন মুক্তির অপেক্ষায়। এটি রনির তৃতীয় চলচ্চিত্র।

নতুন এই সিনেমাটির নাম ‘তুই আমার রানী’। এটি যৌথভাবে পরিচালনা করছেন বাংলাদেশের সজল আহম্মেদ ও কলকাতার পীযূষ সাহা। সিনেমার কাহিনী লিখেছেন পীযূষ সাহা নিজেই। বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রী মিষ্টি জান্নাত এবং তার বিপরীতে এ সিনেমাতে অভিনয় করেছেন টালিউড অভিনেতা সূর্য। মিষ্টি-সূর্য ছাড়াও ‘তুই আমার রানী’ সিনেমাতে রয়েছেন আবু হেনা রনি, সজল, রেবেকা রউফ, রাজেশ শর্মা, সুপ্রিয় দত্ত, দোলন, কাঞ্চন।

কলকাতার জি-বাংলা চ্যানেলের মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার সিক্স এ পারফর্ম করে ভারত ও বাংলাদেশে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন রনি। অগনিত ভক্ত বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীদের ভালোবাসায় সীক্ত হয়েছেন আবু হেনা রনি। এরপর দেশে ফিরে সেই দর্শক প্রিয়তা কতটা কাজে লেগেছে এমন প্রশ্নের জবাবে রনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে ওখানেই আমার সুযোগ ছিল। ওরা বলেছিল যে- রনি, তুমি আমাদের টিমে থেকে যাও। কারণ ওখানে যারা টিমের মধ্যে থাকে অর্থাৎ গ্রুমার হিসেবে কাজ করে আমারও সেই গ্রুমার হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব ছিল। একই সঙ্গে ওই ডিরেক্টরের অন্যান্য অনুষ্ঠানও থাকে। সেখানে কাজ করার সুযোগটা ছিল। কিন্তু আমার বাবা-মা, পরিবারের সবাই এদেশে। দেখা গেছে যে- আমি ওখানে মনের দিক থেকে সেইভাবে কাজ করতে পারব না। কিন্তু আমরা ওখানে প্রমাণ করে এসেছি যে- এই কাজটি আমরা এদেশেও করতে পারব। আমাদের দেশে অনেক ডিরেক্টর, অনেক চ্যানেল, কিন্তু এদেশে এসে সেই সুযোগটি আসেনি। কেউ ই ভাবেনি যে- ওরা এই কাজটি করতে পারে। ছোট ছোট আয়োজ হয়েছে কিন্তু কেউ এখনও ভাবেনি যে- স্ট্যান্ডআপ কমেডি বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম হতে পারে। ফলে আমরা এখনও সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারিনি।

তবে বসে নেই রনি। চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছেন নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেই কিছু করার। এ বিষয়ে রনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই একটা ইচ্ছা আছে। আমি হয়তো মিডিয়ায় এখনও ভালো কিছু করতে পারিনি। কিন্তু সারা বাংলাদেশের প্রায় ৪০টি জেলায় স্ট্যান্ডআপ কমেডি ক্লাব করে ফেলেছি। প্রত্যেকটি জেলার নামে নামকরণ করা হয়েছে। যেমন ধরুন- নাটক কমেডি ক্লাব, রাজশাহী কমেডি ক্লাব এরকম। প্রত্যেকটি এলাকায় বড় মাঠে বা শিল্পকলায় ক্লাবের শিল্পীরা শো করে যাচ্ছে।’

রনির বাড়ি নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ৫নং চামারী ইউনিয়নের বিলদহর গ্রামে। তিনি আঃ লতিফ মাষ্টার ও বিনা বেগমের ছেলে। মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার এর ৪০টি পর্বে অংশ নিয়ে ২৫টিতে একক ও যৌথভাবে প্রথম স্থান অধিকার করে অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেন রনি। প্রত্যেকটি পর্বে তার পারফর্ম মুগ্ধ করেছে বিচারকদের।

শুধু অভিনয়, উপস্থাপনা বা কমেডি শো-ই নয়; রনি নিয়মিত লেখা-লেখিও করছেন। এ পর্যন্ত তার বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ পেয়েছে।

লেখালেখি প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘যখন প্রথম বইটা প্রকাশ হয় তখন সবার আগে বাবাকে খবরটা জানাই। প্রথম কপিটা হাতে নিয়ে দৌঁড়ে বাবার কাছে গেলাম। গিয়ে বাবাকে বললাম- আব্বা আব্বা এই বই মেলায় আমার বই বের হচ্ছে। আব্বা বললো- খুব ভালো হয়েছে, এবার তুই বের হ। বাবার কথা হচ্ছে- আমি নিজে বই পড়তাম না, সেই আমি বই লিখছি। হা হা হা।’

বই লেখার অনুপ্রেরণা কি করে হয়েছে- জানতে চাইলে কৌতুকের ছলে মজা করে হেঁসে রনি বলেন- ‘আমার হাতের লেখা ভালো ছিল। হা হা হা।’

তিনি বলেন, ‘আমার বইগুলো এক একটা একেক রকম ভাবে লেখা। একটা বাচ্চাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বই। মজার মজার প্রশ্ন-উত্তর। আর একটি হচ্ছে- কিভাবে স্ট্যান্ডআপ কমেডি করতে হয়, তা নিয়ে লেখা। আর একটা মীরাক্কেলের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা।

এসএ/