ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

লোকগানে ঈদ আনন্দ: দর্শক প্রতিক্রিয়া 

প্রকাশিত : ১০:৫৫ পিএম, ৫ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১৮ পিএম, ৫ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার

‘লোকগানে ঈদ আনন্দ’ গেল ঈদে একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান ছিলো। গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ এসব গান শুনে উজ্জীবিত হয়েছিল। প্রথম দিন ছিলো সিলেট অঞ্চলের গান। সিলেটের সাধারণ দর্শকরা তাদের এই গানগুলো শুনে মুগ্ধ হয়েছিল। স্যোশাল মিডিয়া ও মুঠোফোনে অনেকে তাদের ভালোলাগার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে।          

বিশেষ করে বাউল আব্দুল করিমের কালজয়ী গানগুলো সবাইকে মুগ্ধ করে। সিলেট থেকে বাউল শিল্পী মুকুল ফোন করে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, একুশে টেলিভিশনে বাউল শিল্পীদের নিয়ে সাতদিন ব্যাপী গানের অনুষ্ঠান এবারের ঈদে নতুন ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করেছে। এতে বাউল শিল্পীরা উজ্জীবিত হবে। দেশীয় সংস্কৃতির প্রাধান্য রক্ষিত হবে। শিল্পী আসিকের দরদী কণ্ঠের গান সিলেট ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের মন জয় করে নেয়।    

দ্বিতীয় দিন ছিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজের গান। তার গানে এক ধরনের তন্ময়তার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে আধ্যাত্মিক আর মাইজভান্ডারী গান ছিল গণ মানুষের মনের খোরাক। সেদিন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা বাদ দিয়ে অগণিত দর্শক মমতাজের কণ্ঠে মরমী গান উপভোগ করেন।     

ভারতের আন্দামান নিকোবর দ্বীপকুঞ্জ থেকে এক দর্শক ফোন করে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তারা মমতাজের গান শুনেন এবং গানগুলো খুবই উপভোগ করেছেন। তাদের অঞ্চল থেকে তারা বাংলাদেশী কয়েকটা চ্যানেল দেখেন তার মধ্যে একুশে টেলিভিশন অন্যতম।   

চাপাইনবাবগঞ্জের হানিফ মিয়া একুশে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রয়োজক রঞ্জন মল্লিককে গভীর রাতে ফোন করে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘ভাই আমাগো অঞ্চলের গান টেলিভিশনে দেখলাম। গেরামের অনুষ্ঠান টিভিতে দেখুম ভাবতে পারি নাই।’ 

ময়মনসিংহ অঞ্চলের জয়তুন বিবির পালা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানটির প্রযোজক রঞ্জন মল্লিককে পালাটি টেলিভিশনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। 

‘আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অনেক পুরনো। এ সংস্কৃতিকে ঈদে তুলে ধরে দেশের ভালো করেছেন বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ। এ ধরনের কাজের জন্য একুশে টেলিভিশনের প্রশংসা করেন।  

লোকগানে ঈদ আনন্দ সঙ্গীতানুষ্ঠানে বিশেষ আয়োজন ছিলো খুলনা অঞ্চলের পটগান এবং অষ্টক গানের গাজী কালুর পটগানের পালাগান। এসব গান দেখে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ ভীষণ মুগ্ধ হয়। তারা অনেকে বলেন গতানুগতিক গানের ধারা থেকে বের হয়ে একুশে টেলিভিশন জনগণের চাহিদার প্রতি নজর দিয়েছে। ফলে ঈদে ভিন্ন ধরনের দেশজ গান উপভোগ করতে পেরেছে দেশের সাধারণ মানুষ।  

জনগণের চাহিদার প্রতি নজর দেওয়ায় একুশে টিভির কলাকুশলী, প্রযোজকদের তারা ধন্যবাদ জানান। ৭দিনের ৭টি অনুষ্ঠানের চারটিতে উপস্থাপক ছিলেন। উপস্থাপিকা পূজা সেনগুপ্তের সাবলিল উপস্থাপনা দর্শককে মুগ্ধ করে। উপস্থাপিকা নিজেও বলেন, ঈদে এ ধরনের অনুষ্ঠান অন্যান্য চ্যানেলগুলো করেনা। একুশে টিভি লোকগানের এমন অনুষ্ঠান করে জনগণের চাহিদাকে মুল্যায়ন করেছে।

প্রযোজক রঞ্জন মল্লিক মনে করেন, এটা খুব সাহসী উদ্যোগ ছিলো। তিনি বলেন এই অনুষ্ঠানের জন্য দুই মাস ধরে প্রস্তুতি চলে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর অনুষ্ঠান নির্মাণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, এটা একটা টিম ওয়ার্ক। টিমের ক্যামেরাম্যান থেকে শুরু করে এটা নির্মাণ এবং মেকাপ আর্টিস্ট সবাই আন্তরিক ছিলো। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভালো কিছু করা সম্ভব। সর্বোপরি তিনি মার্কেটিং বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। 

‘লোকগানে ঈদ আনন্দ’ অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করে পিএইচপি।  

কেআই/এসি