‘তুই একদিন অনেক বড় হবি’
প্রকাশিত : ১১:৫৮ পিএম, ৮ জুলাই ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১০:১২ এএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা বলেছেন, স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আমার মাথায় হাত দিয়ে বলেছিলেন তুই একদিন অনেক বড় হবি। পরম পিতৃস্নেহে আমার মাথায় তিনি হাত রেখেছিলেন। অত:পর লাল সবুজের পতাকা নিয়ে ঘুরেছি প্রায় সারা বিশ্ব। বুড়িগঙ্গা থেকে সুদূর আটলান্টিক হয়ে মিসিসিপির তীর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে ধরেছি। অনুভব করেছি বিশ্ব অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ যেন একি মালায় গাঁথা।
রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ অনুষ্ঠানে ববিতা এসব কথা বলেন। এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার- এ ববিতাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আপ্লুত হয়ে ববিতা বলেন, আজকের এ দিনে আমার খুব মনে পড়ছে আমার ছেলেকে। যে সুদূর কানাড়ায় পড়াশোনা করছে। মনে পড়ছে আমার প্রয়াত বাবা মাকে। আমার মেন্টর শহীদ জহির রায়হানকে। বিশ্ব বরেণ্য চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়, সুভাস দত্ত ও অসংখ্যা আপন মানুষকে। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে পড়ছে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি বলেন, জীবনের কাছে আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই। শুধুই আপনাদের ভালোবাসা। এই ভালোবাসা নিয়ে সময়ের সীমান্ত অতিক্রম করে বারে বারে ফিরে আসবো ধান সিঁড়ি নদীর এই চির সবুজ বাংলায়।
এই পুরস্কার ভক্তদের উৎসর্গ করে ববিতা বলেন, আমার দুই বোন সুচন্দা ও চম্পা মিলে আমরা এক চলচ্চিত্র পরিবার। স্বর্ণালী কৈশরে বেনী দোলানো দিনে শহীদ জহির রায়হানের হাত ধরে আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। অত:পর বিশাল এক সময় অতিক্রম করে দেশে বিদেশে স্বীকৃতি এবং পুরস্কার নিয়ে আজ আমি জীবনের এক প্রান্তের মুখোমুখি হয়েছি। আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত আমি। আমাকে দেওয়া আজীবন সম্মাননা বাংলাদেশের সকল জনগনের জন্য, আমার ভক্তদের জন্য উৎসর্গ করলাম।
নায়ক রাজরাজ্জাকের নামে ফিল্ম আর্কাইভ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে ববিতা বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ এবং আমার পরম শ্রদ্ধেয় নায়ক রাজরাজ্জাক চলে গেছেন মহাকালের পথে। কিংবদন্তি এই শিল্পী যিনি স্বাধীনতা পদক, আজীবন সম্মাননাপদকসহ এদেশের মানুষের একজন অতি আপনজন হয়ে উঠেছিলেন। এই মহানায়কের নামে একটি ইনস্টিটিউট বা রাজ্জাক ফিল্ম আর্কাইভ নামকরণ করার জন্য আমি আবেদন জানাচ্ছি।
শিল্পীদের বাসস্থান ও চিকিৎসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, একজন শিল্পী তার হাসি আর কান্না দিয়ে আজীবন সবাইকে অভিভূত করেছেন। সেই শিল্পী জীবনের পড়ন্ত বেলায় বাসস্থান আর চিকিৎসার জন্য যুদ্ধে অসহায়ভাবে হেরে যান। শিল্পীদের জন্য চিকিৎসা ও স্বল্পমূল্য বাসস্থান এর ব্যবস্থা করার জন্য আপনার নিকট আবেদন করছি।
সর্বশেষ ববিতা নতুন শিল্পীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের আরও সিনসিয়ার হতে হবে। আমি তরুণ শিল্পীদের মাঝে অনেক সম্ভাবনা দেখি। সঠিকভাবে পরিচালিত হলে বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে বাংলাদেশ আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
এসি