ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ভূমিকায় শঙ্কিত জাতিসংঘ কমিশন

প্রকাশিত : ০৩:২৫ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার

‘ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল’ কর্তৃক নিযুক্ত মিয়ানমারে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি বলেছেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে মানবাধিকার অবস্থা পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তাকে কোনও সহায়তা করেনি। মিয়ানমারের অনেকের সঙ্গে তার টেলিকনফারেন্স হয়েছে, তাদের কাছ থেকে মিয়ানমার সরকারের অগ্রগতির বিষয়ে যা শুনেছেন তাতে তিনি রীতিমত শঙ্কিত। যাদের সঙ্গেই কথা হয়েছে তারা সবাই বলেছেন, ‘যথেষ্ঠ হয়েছে, আর না। এবার মিয়ানমার বাসিন্দাদের ওপর যে নির্যাতন চলছে তা বন্ধ হওয়া উচিৎ।’

তিনি আরও বলেন, এখনও রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর মতো উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। জাতিসংঘের ইনফরমেশন সেন্টারে প্রকাশিত তার এক বিবৃতি থেকে এসব কথা জানা গেছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। এর আগে থেকেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আরও চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। সব মিলে বাংলাদেশে এখন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বিপুল পরিমাণ শরণার্থীকে ফিরিয়ে নিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি করতে বাধ্য হয় মিয়ানমার। তবে রোহিঙ্গা সংকট পর্যবেক্ষণে ৭ দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষ দিনে রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লি বলেছেন, যেহেতু এটি পরিষ্কার যে মিয়ানমার সরকার কার্যত কোনও অগ্রগতিই অর্জন করেনি অর্থাৎ, রোহিঙ্গাদের বঞ্চিত করার আইন, নীতি ও প্রথার বিলুপ্তিতে এবং দক্ষিণ রাখাইনকে নিরাপদ করে তুলতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, সেহেতু নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

লি ঢাকার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে মানবাধিকার অবস্থা পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তাকে কোনও সহায়তা করেনি। মিয়ানমারের অনেকের সঙ্গে তার টেলিকনফারেন্স হয়েছে জানিয়ে লি জানিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে মিয়ানমার সরকারের অগ্রগতির বিষয়ে যা শুনেছেন তাতে তিনি রীতিমত শঙ্কিত। যাদের সঙ্গেই কথা হয়েছে তারা সবাই বলেছেন, যথেষ্ঠ হয়েছে, আর না। এবার মিয়ানমার বাসিন্দাদের ওপর যে নির্যাতন চলছে তা বন্ধ হওয়া উচিৎ।

ইয়াং লি বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। রোহিঙ্গাদের জন্য তিনটি প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন লি। সেগুলো হলো- সবার জন্য শিক্ষা, জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জীবিকার প্রকৃত সুযোগ এবং রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

এসএইচ/