ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা
হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:০৬ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) উত্তরবঙ্গের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এরপর ২০০২ সালের ০৮ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি ও উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ইন্টারনেট সেবার বিকল্প নেই। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় না হয়েও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চমানের ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা থাকলেও এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছেন হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার লক্ষে ২০১৪ সালে সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে ওয়াই-ফাই (ইন্টারনেট) নেটওয়ার্কের আওতায় আনে প্রশাসন। কিন্তু কিছুদিন চালানোর পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপর দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর চলে গেলেও তা আর সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে নতুন প্রশাসন আসার পর পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ওয়াই-ফাই জোন করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তা সীমাবদ্ধ রয়েছে শুধু টিএসসির মধ্যে।
তদুপরি আরোপ করা হয়েছে নানা বাধ্যবাধকতা। ইন্টারনেট সংযোগ পেতে গেলে করতে হবে রেজিষ্ট্রেশন, ইউটিউবে ঢোকা যাবে না, সন্ধ্যা ৭টা পর নেট চালানো যাবে না। তাছাড়াও সংযোগটি খুব ধীরগতি সম্পন্ন। দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে প্রায়ই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিন দিন তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ আর হতাশা।
শেখ রাসেল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুস জোহা বলেন, আমাদের হলগুলোতে ওয়াইফাই নেই এজন্য আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেক সময় এমবি কিনলেও হঠাৎ করে এমবি শেষ হয়ে যায়, পরিপূর্ণ তথ্য পেতে সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
আমার জানা মতে, পাবলিক ভার্সিটির অধিকাংশ ছেলেমেয়েরা মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদের পক্ষে নিয়মিত টাকা দিয়ে এমবি কিনে এসাইনমেন্ট, ইনফরমেশন সংগ্রহ করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হলগুলোতে ওয়াইফাই আছে আর আমাদের এখানে না থাকাটা দুঃখজনক।
ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ছাত্রী চয়নিকা ব্যানার্জি বলেন, থিসিস, এসাইনমেন্ট,প্রেজেন্টেশনসহ অনেক কাজে ইন্টারনেটের প্রয়োজন হয়। দিনের বেলায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ওয়াইফাই জোনে গিয়ে ইন্টারনেটের সে চাহিদা মেটানো গেলেও রাতে কোনো জরুরি প্রয়োজনে, হলের বাইরে যাওয়ারও উপায় নেই, সেই সঙ্গে মডেমেরও ব্যবহার সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। এতে অনেক দিক হতে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডঃ মো. সফিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হলগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের যে কথা ছিল তা আর্থিক সংকটের কারনে আমরা কাজ শুরু করতে পারিনি। তবে খুব দ্রুত এ বিষয়ে ভিসি স্যারের সাথে কথা বলব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার মো. সৈকত আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, হলের নেট সংযোগ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে তবে এখনও গ্রীন সিগন্যাল পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট না থাকায় মুলত এই সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করি, খুব দ্রুত সময়ে আমরা একটা ভাল ফলাফল পাব।
কেআই/এসি