ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গা গ্রামে স্থাপিত বৌদ্ধপল্লী উচ্ছেদ

প্রকাশিত : ০১:২৪ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার

জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাগ্রামে স্থাপিত বৌদ্ধপল্লী উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এবং মিয়ানমারের শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে দেওয়া জমিতে ওই বৌদ্ধগ্রাম স্থাপিত হয়েছিল। জানা গেছে, দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির নির্দেশেই বৌদ্ধপল্লীগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট দেশটির নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরসা, এমন অভিযোগ এনে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে শুধু সেনবাহিনী-ই নয়, নির্যাতন ও বর্বরতায় অংশ নিয়েছে দেশটির উগ্র বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। এতে দেশটি থেকে অন্তত ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

রোহিঙ্গা সংকট পর্যবেক্ষণে ৭ দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষদিনে মিয়ানমারে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি বলেছেন, ‘যেহেতু এটি পরিষ্কার যে মিয়ানমার সরকার কার্যত কোনও অগ্রগতিই অর্জন করেনি অর্থাৎ, রোহিঙ্গাদের বঞ্চিত করার আইন, নীতি ও প্রথার বিলুপ্তিতে এবং দক্ষিণ রাখাইনকে নিরাপদ করে তুলতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, সেহেতু নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।’

জাতিসংঘ কমিশনের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি প্রকাশের একদিনের মাথায় সোমবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় দক্ষিণাঞ্চলের মংডু শহরের কাছে রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামে স্থাপন করা বৌদ্ধ গ্রাম উচ্ছেদ করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশের প্রায় ১০টি গাড়ি থিন বাও গুই গ্রামে প্রবেশ করতে দেখা যায়। সেখানে রোহিঙ্গাদের জমিতে ৪৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘরগুলো ভেঙ্গে ফেলায় বৌদ্ধরা এলাকাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

২০১৭ সালের নভেম্বরে থিন বাও গুয়ে গ্রামে নতুন প্রায় ১০০ ঘর নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করা হয়। আর গ্রামের প্রবেশমুখে একটি অস্থায়ী বৌদ্ধ মঠও স্থাপন করা হয়। রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ি-ঘরের পাশে তারা এই নতুন বসতি স্থাপন করে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি`র মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল সেই `আদর্শ বৌদ্ধগ্রাম` নির্মাণের কথা। বলা হয়েছিল, বুলডোজারে রোহিঙ্গা স্মৃতি মুছে দিয়ে বিপুল সামরিকায়িত রাখাইনে এখন বৌদ্ধ মডেল গ্রাম নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে, রাখাইন-বৌদ্ধদের অর্থায়ানে পরিচালিত সংস্থার মাধ্যমে রোহিঙ্গাশূন্য রাখাইন গড়ে তোলার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছিলো।

এমজে/