ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

কী কী নিয়ম মেনে চললে নরমাল ডেলিভারী হতে পারে

ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদা

প্রকাশিত : ০৭:১০ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৭:১৯ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৮ বুধবার

বর্তমানে আমাদের দেশে সিজারিয়ান ডেলিভারীর সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গত ৬-৭ বছরে সিজারের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।

সিজার বাড়ার পেছনে রোগীর স্বজনরা ডাক্তারদের ব্যবসায়িক মনোভাবকে দায়ি করে থাকেন। কিন্তু নিজেরা বুঝতে চান না সিজার করানোর ক্ষেত্রে তাদেরও দায় কম না।

বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, ২০১০ সালে মোট ডেলিভারীতে সিজারের পরিমাণ ১২% থাকলেও ২০১৬ সালে এর পরিমাণ হয়েছে ৩১%।

এখনো প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে সম্পাদিত প্রসবের ৮৩% সিজারিয়ান। সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিজারিয়ান প্রসবের হার ৩৫%। এখনো ৫০% এর বেশি প্রসব বাড়িতে হয়।

একজন নারী গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই তাকে কিছু রুটিন নিয়ম মেনে চলতে হয়। যা নরমাল ডেলিভারীতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এসব বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।

# প্রথমেই একজন মা প্রাকৃতিক নিয়মে ডেলিভারী করবেন এমন শক্ত মনের জোর থাকতে হবে।

# lugel exercise নামে একধরণের ব্যায়াম আছে। যাতে পেলভিক এলাকার মাংসপেশী সংকোচন ও প্রসারণ করার মাধ্যমে কটিদেশের প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়।

# গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে প্রশ্বাস ছাড়লে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তাহলে লেবারে চাপ দিতে বললে শ্বাস বন্ধ করে চাপ দিতে পারেন।

# নিয়মিত হাঁটলে বা সাঁতার কাটলে মা শারীরিকভাবে শক্তিশালী হন।

# নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে কোন রোগ থাকলে যেমন হাইপার টেনশন ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে মা নরমাল ডেলিভারীর চেষ্টা করতে পারেন।

# ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করলে সন্তান খুব বড়ও হয়না আবার ছোট ও হয়না। ফলে নরমাল ডেলিভারীর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

একজন প্রসূতি মা শুরু থেকে প্রসবকালীন সময় পর্যন্ত পুরো নয় মাস প্রসূতিবিদের সেবা নেন। ফলে প্রসূতির সাথে প্রসূতিবিদের একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।

এ কারণে ওজিএসবি- র প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে আমি পর্যন্ত সকলেই চাই প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ মায়ের কোলে সুস্থ সন্তান আসুক। সে কারণে প্রসূতিবিদদের সংগঠন ওজিএসবি কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। প্রসূতির প্রসব সেবায় সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ করেছে। প্রয়োজনে যেন একটি সিজারও না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট সকলের।

[লেখক পরিচিতি: ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদা একজন প্রসূতি, স্ত্রী ও বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন। তিনি শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, মাতুয়াইল- এ গাইনী বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও রাজধানীর পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে তার চেম্বার রয়েছে।]

email: mahmudak50@gmail.com

অনুলেখক: আলী আদনান।