ঢাকা, শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২০ ১৪৩১

যে কারণে পরোয়ানা নিয়ে দেশে ফিরেন নওয়াজ

প্রকাশিত : ০২:৪৮ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৮ শনিবার

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানে ফিরেন। দেশের মাটিতে পা রাখার পরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। আর পাকিস্তানে ফেরার আগেই তারা জানাতে তাদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু সাজা ঘোষণার পর গ্রেফতার হবেন জেনেও কেন তারা পাকিস্তানে ফিরলেন তা পাকিস্তানের রাজনীতিতে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডন রাজনৈতিক সাংবাদিক ও বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে উঠে এসেছে, বেশ কিছু কারণ তা তুলে হলো-

নওয়াজ ও মরিয়মকে গত সপ্তাহে অ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। রায়ের সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন তারা দুজনই।

ডনের রাজনীতিবিষয়ক সাংবাদিক আদনান রসুল জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নওয়াজ ও মরিয়মের দেশে ফেরা ও গ্রেফতারে বেশি মনোযোগ দিয়েছে। স্বেচ্ছায় দেশে আসা দুই ব্যক্তির জন্য এমন আয়োজন প্রয়োজন ছিল না। অথচ একই দিনে বেলুচিস্তানে শতাধিক মানুষ বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন। সরকারের উচিৎ ছিল প্রতিবাদকারীদের গ্রেফতারের চেয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে মনোযোগী হওয়া। নির্বাচনের মাত্র ১০ দিন আগে এমন আচরণে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ অন্যায়ের শিকার হওয়ার যে দাবি করে আসছে তা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ করে দিলো।

রসুল আরও জানান, নওয়াজ ও মরিয়মের জন্য ফিরে আসাটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিদেশে নির্বাসিত হওয়াটা ছিল নওয়াজের রাজনৈতিক জীবনে বড় ধরনের কালো অধ্যায়। এবার যখন সুযোগ পেয়েছেন তিনি তা কাজে লাগিয়েছেন। এই নিন্দা এখন আর তাকে বয়ে বেড়াতে হবে না। মরিয়মের জন্য বিষয়টি নিজেকে বেনজির ভুট্টোর মতো করে হাজির করা। উভয়ে পূর্ণ কারা মেয়াদ ভোগ করবেন কিনা তা বিতর্কের বিষয়। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, এখনকার পিএমএল-এন ১৯৯৯ সালের দল এক নয়। এখনকার দলটি শুধু রাজনৈতিক দল নয় বরং সামাজিক পরিচিতি গড়ে তুলছে। স্বৈরাচারের হাতে দলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন তা লৌহকঠিন হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো একমাত্র শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

সাংবাদিক ও বিশ্লেষক জাহিদ হুসেইন বলেন, এছাড়া তাদের সামনে আর কোনও সুযোগ ছিল না। নির্বাচনে দলের জন্য ভোট চাওয়ার জন্য সময় ছিল মাত্র ১০ দিন। আমি মনে করি, নওয়াজ আশা করছেন যখন রায়টি আপিলে যাবে তখন সাজা মওকুফ হতে পারে। এটাই ছিল তার জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ।

জিও নিউজের মাজহার আব্বাস বলেন, ১৯৯৯ সালে সৌদি আরবে চলে যাওয়ার ঐতিহাসিক ভুলটি শুধরে নিয়েছেন নওয়াজ। ফিরে এসেছে তারা জনগণের প্রতি একটি বার্তা দিয়েছেন যে, তারা সাজাভোগ করতে প্রস্তুত।

নওয়াজ শরীফকে গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক নতুন মেরুকরণ শুরু হলো বলে অনেক রাজনৈতিক বশ্লেষক মনে করেন। নদেশটিতে রাজনৈকি অস্থিরতা লেগেই রয়েছে।
তথ্যসূত্র: ডন।

এসএইচ/