রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা পাঁচ গোল
প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৮ সোমবার
ফুটবল খেলায় গোল বড় বিষয়। যতই ভালো খেলোক কোনো দল গোল না করতে পারলে তার সেই দলের মূল্য থাকে না। জয়ের জন্য প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারলেই সার্থকতা। নইলে কোনো সফলতা থাকে না। রাশিয়া বিশ্বকাপে মোট গোল হয়েছে ১৬৯টি। এই গোলগুলোর মধ্যে সেরা পাঁচটি বেছে নেওয়া শুধু কঠিনই নয়, প্রায় অসম্ভব। কিন্তু পাঁচটি গোলকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই বিশ্বকাপের জন্য।
ড্যানিশ চেরিশভ-
সোচিতে এবারের বিশ্বকাপের শেষ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ ছিল স্বাগতিক রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে। ম্যাচের ৩১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটছিলেন রাশিয়ান উইঙ্গার ড্যানিশ চেরিশভ। সামনে থাকা আর্তেম জুবাকে বল বাড়িয়ে তিনি ছুটছিলেন ডি বক্সের দিকে। জুবা আবার চেরিশভকে পাস দিলেন। আর সেখান থেকেই বাঁ পায়ের দূরপাল্লার শট চেরিশভের। আর এরই সঙ্গে ম্যাচের প্রথম গোলও পেয়ে যায় রাশিয়া। এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম মনকাড়া গোল ছিল এটি। যদিও এই ম্যাচে পেনাল্টিতে হেরে যায় রাশিয়া।
বেঞ্জামিন প্যাভার্ড-
কাজানে এবারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম খেলা। একদিকে গ্রুপ `সি`র চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স আর অন্যদিকে গ্রুপ `ডি`র রানার্সআপ আর্জেন্টিনা। নকআউটের খেলাটিতে ছিল টান টান উত্তেজনা। ম্যাচে তখন ২-১ গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে মাঠের বাঁ পাশ দিয়ে ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজের লম্বা ক্রসে বল চলে যায় ডি বক্সের ডান পাশে। আর সে জায়গায় ছিলেন আরেক ফরাসি ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন প্যাভার্ড। ডি বক্সের বাইরে থেকেই ডান পায়ের জোরালো শট। আর্জেন্টিনার গোলকিপার ফ্রাঙ্কো আরমানির গোলটি ঠেকানোর কোনো সাধ্যই ছিল না। বলটি ঘুরতে ঘুরতে গোলপোস্টের বা কোনা দিয়ে ঢুকেছিল আর্জেন্টিনার জালে। এটাও সেরা গোলের মধ্যে একটি।
টনি ক্রুস-
গ্রুপ `এফ`-এ থাকা সুইডেনের সঙ্গে সেই ম্যাচটি না জিতলে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে জার্মানদের বিদায় নিশ্চিত হতো। কেননা প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে ১-০তে হেরেছিলেন জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। জার্মানদের জন্য বাঁচামরার লড়াইয়ের ম্যাচটি তখন ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করছিল। ম্যাচের শেষ দিকে জার্মানির বিদায়ের ঘণ্টা বাজতেও শুরু করেছিল। নির্ধারিত সময় পার হয়ে চলছিল অতিরিক্ত সময়ের খেলা। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটই জার্মানদের জন্য সুযোগের বরাত নিয়ে এলো। সুইডেনের ডি বক্সের বাইরে মাঠের বাঁ পাশ দিয়ে একটি ফ্রি কিক পায় জার্মানি। শেষ মিনিটে শেষ ভরসা ছিলেন টনি ক্রুস। মার্ক রিউসের সঙ্গে আগে থেকেই তিনি পরামর্শ করে নিলেন যে, বলটি কীভাবে মারবেন? রিউস ডি বক্সের লাইনের মধ্যে দাঁড়ানো আর ক্রুস বল নিয়ে ডি বক্সের বাইরে। রেফারি বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে রিউসের দিকে বলটি সামান্য ঠেলে দিলেন ক্রুস। এই গোলটিও সেরা গোলের মধ্যে অন্যতম এই বিশ্বকাপে।
কেভিন ডি ব্রুইন-
রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও বেলজিয়াম। কাজান এরেনার এ ম্যাচটিতে ব্রাজিল প্রথমেই পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফার্নান্দিনহোর আত্মঘাতী গোলে। ১৩ মিনিটের সেই গোলের পর ব্রাজিলকে প্রথমার্ধে আরও একটি গোল হজম করতে হয়। ম্যাচের ৩১ মিনিটে বেলজিয়ামের মাঝ মাঠে থেকে বল নিয়ে ছুটছিলেন রোমেলু লুকাকু। মাঝমাঠ থেকে তিনি বল বাড়িয়েছিলেন মাঠের ডান পাশে ডি ব্রুইনের উদ্দেশ্যে। ঠিক ডি বক্স সীমানা থেকে আড়াআড়ি শট ডি ব্রুইনের। বেলজিয়ামও পেয়ে গেল তাদের দ্বিতীয় গোল। আর এই গোলটিও সেরা গোলের মধ্যে অন্যতম ধরা হচ্ছে।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো-
সোচিতে নিজেদের প্রথম খেলা গ্রুপ `বি`-তে থাকা স্পেন ও পর্তুগালের। ম্যাচের ৮৮ মিনিটের আগ পর্যন্ত স্পেন ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল। স্পেনের পক্ষে দিয়েগো কস্তার জোড়া গোল করেছিল। অন্য গোলটি করেছিলেন নাচো। আর পর্তুগালের পক্ষে জোড়া গোল ছিল রোনালদোর। তবে ঠিক ৮৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে রোনালদোর ফ্রি কিক। বল ততক্ষণে স্পেনের জালে। পাঁচবারের ব্যালন ডি`অর জয়ী রোনালদো ক্যারিয়ারের ৫১তম হ্যাটট্রিকও তুলে নিলেন। এই গোলটিও সেরা গোলের মধ্যে অন্যতম বলে মনে হয়।
এসএইচ/