ঢাকা, রবিবার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে বিপন্ন ৩০০ বছরের রেইনট্রি

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার

কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকা। ৩০০ বছরের একটি রেইনট্রি এখনও দাঁড়িয়ে আছে সেখানে।  সরকারি জমিতে বেড়ে ওঠা এ বৃক্ষ ডালপালা ছড়িয়ে ছায়া দিচ্ছে মানুষকে। এ শহরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে বৃক্ষটি। অথচ তা কেটে ফেলার জন্য প্রায় এক যুগ ধরে অপচেষ্টা চালাচ্ছে প্রভাবশালী একটি মহল।

এরই মধ্যে দখলদাররা ডালপালা কেটে বৃক্ষটির অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রভাবশালী ব্যক্তি সোহরাব মিয়ার ছত্রছায়ায় এ অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ ক্ষুব্ধ নাগরিকদের। অভিযুক্ত সোহরাব মিয়ার মতে, খরিদা সূত্রে তিনি ওই ভূমি ও গাছের মালিক। নিজের কেনা জমিতে তিনি নির্মাণ কাজ করতেই পারেন। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার এ দাবির কোনো ভিত্তিই নেই।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার আক্তার জামীল জানান, মালিকানার দাবিদার সোহরাব মিয়াকে তিনি কাগজপত্র নিয়ে তার অফিসে আসার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আর কার্যালয়ে আসেননি। যা থেকে বোঝা যায়, গাছ বা গাছের অংশের জমিতে তার মালিকানা নেই।

শহরের পুরানথানা মোড়ে রেইনট্রির বেড়ে ওঠা অব্যাহত থাকে। এই রেইনট্রি ও এর আশপাশের এলাকা দখলদারদের চোখে পড়ে ২০০৬ সালের দিকে। এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, তারা জন্ম থেকেই শুনে আসছেন এই পুরানথানার জমি ও গাছটির মালিকানা সরকারের। কিন্তু ২০০৬ সালের দিকে এই জমি ও গাছ সোহরাব মিয়া ও তার আত্মীয়-স্বজন নিজেদের বলে দাবি করেন এবং দখল করে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের পথ সুগম করতে তারা গাছটির ডালপালা কাটতে শুরু করেন। তখন এ ব্যাপারে স্থানীয়রা প্রশাসনে অভিযোগ জানালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবা হাসনাত পুলিশ ফোর্স নিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু প্রায় এক যুগ নিশ্চুপ থাকার পর সম্প্রতি সোহরাব মিয়া ও তার লোকজন স্থানীয় প্রভাবশালীদের একাংশকে উৎকোচ দিয়ে ও নানা প্রক্রিয়ায় নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছেন। রেইনট্রির বড় বড় ডালপালা কেটে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজের অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে এই চক্র। এতে আবারও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয় এলাকাবাসী।

পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, ওই এলাকায় ভবন বা মার্কেট নির্মাণ করার কোনো অনুমতি পৌরসভা দেয়নি। সেখানে যা হচ্ছে, তার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেন পৌর মেয়র।

একে//