ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

যে কারণে পাকিস্তানের নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ!

প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৫:৪৪ পিএম, ২২ জুলাই ২০১৮ রবিবার

নির্বাচনী প্রচারণায় সহিংসতার ঘটনা আর নানা ধরণের রাজনৈতিক বিতর্ক তৈলি হলেও বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন কোটি কোটি পাকিস্তানি। প্রায় ২০ কোটি মানুষের এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশে কী হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ: ভারতের এই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন, এটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান উন্নয়নশীল অর্থনীতির একটি আর বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম প্রধান দেশগুলোর একটি। তাই পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে ভারতের মাথা ব্যথা কাজ করে বলে জানা যায়। এ জন্য এ নির্বাচন নিয়ে সবার দৃষ্টি থাকে।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে সামরিক ও বেসামরিক শাসনের মধ্যে দোদুল্যমান ছিল পাকিস্তান। কোনো একটি বেসামরিক সরকার আরেকটি বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ঘটনা এবার দ্বিতীয়বারের মত ঘটবে পাকিস্তানে।

তবে পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারের এই ধারাবাহিকতা উদযাপন করার সুযোগ পাচ্ছেন না খুব বেশি মানুষ। এবারের নির্বাচনের আগে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নাওয়াজ (পিএমএল-এন) ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে চলা অস্থিরতাই ছিল দেশটিতে প্রধান আলোচনার বিষয়।

পিএমএল-এন`এর অভিযোগ, আদালতের সহায়তা নিয়ে দেশটির শক্তিশালী নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। অনির্দিষ্ট নির্বাচনী আইন ভঙ্গের দায়ে সারাদেশে দলটির প্রায় ১৭ হাজার সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে দেশটির গণমাধ্যমকেও ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে এবং তাদের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে জঙ্গি সংস্থার সদস্যদের অংশগ্রহণও পাকিস্তানিদের একটি বড় চিন্তার বিষয়।

অনেকেই মনে করেন দেশের পুরোনো ধারামাফিক নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর সুবিধার্থে নির্বাচনী কৌশল সাজানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করার জন্য "আক্রমণাত্মক ও নির্লজ্জ" প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে যা পাকিস্তানের একটি "কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে" পরিণত হওয়ার জন্য আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

নির্বাচনী প্রচারণায় এরমধ্যে সহিংস আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে। ১৩ জুলাই বেলুচিস্তানে এক হামলায় প্রায় ১৫০ জন মানুষ মারা যায়, যার দায় স্বীকার করেছে আইএস।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে পানামা পেপার্স তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে পাকিস্তানের আদালত তাকে সরকারি দায়িত্বে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে। এরপর তিনি লন্ডনে চিকিৎসারত স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও জুলাইয়ের শুরুতে কন্যা মরিয়মকে নিয়ে তিনি দেশে ফেরত আসেন এবং গ্রেফতার হন।

খোলামেলাভাবে সেনাবাহিনীর সমালোচনা করায় ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টার কারণে সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে কোনো ধরণের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী।

নওয়াজ শরীফের ছোট ভাই শেহবাজ শরীফ পিএমএল-এন`এর প্রচারণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি।

 এসএইচ/