ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

মানুষ হিসেবে ঠিক কাজটিই করেছেন ওজ়িল: সানিয়া মির্জা

প্রকাশিত : ০২:৫৭ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৩:১২ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৮ বুধবার

`বর্ণবৈষম্যে`র অভিযোগে তুলে রাগে-ক্ষোভে ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন জার্মানির তারকা ফুটবলার মেসুত ওজিল। তার অবসর নিয়ে ফুটবল বিশ্বে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। তার অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক চলছে। ঠিক এ সময়ে এই জার্মান তারকার পাশে দাঁড়ালেন ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।

মেসুত ওজ়িলের অবসরের ঘটনায় ব্যথিত সানিয়া মির্জ়া! সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর থেকেই তিনি কোর্টের বাইরে। কিন্তু ক্রীড়া দুনিয়ার সমস্ত খবরই তাঁর কাছে রয়েছে। ওজ়িলের খোলা চিঠির একাংশ টুইটারে পোস্ট করে সানিয়া লিখেছেন, ‘এক জন খেলোয়াড়ের পক্ষে এই লেখা পড়া অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। মানুষ হিসেবে ঠিক কাজই করেছেন ওজ়িল। কোনো অবস্থাতেই বর্ণবিদ্বেষ মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তা খুবই দুঃখজনক।’’

একা সানিয়া নন, ওজ়িলের পাশে দাঁড়িয়েছেন রিয়ো ফার্ডিনান্ড, জেহোম বোয়াটেং, হেক্তর বেলেরিনের মতো তারকারাও। ইংল্যান্ড জাতীয় দল ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন তারকা টুইটারে লিখেছেন, ‘তোমায় শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’

ওজ়িলের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে বোয়াটেং লিখেছেন, একসঙ্গে ২০০৯ সালে অনূর্ধ্ব-২১ ইউরো কাপ জিতেছি। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তোমার সঙ্গ সব সময়ই উপভোগ করেছি।

 আর্সেনালে ওজ়িলের প্রাক্তন সতীর্থ ও স্পেন জাতীয় দলের ডিফেন্ডার হেক্টরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অবিশ্বাস্য! মাঠের মধ্যে দেশের জন্য যে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে, মাঠের বাইরে তাকে এ ভাবে অপমান করা হবে? সাবাশ ওজ়িল, এই ধরনের ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠার জন্য।’

ওজিলের অভিযোগ, জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা হেরে গেলেই তাঁকে অভিবাসী বলে কটাক্ষ করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার পর ওজিলের ওপর জার্মানিতে আক্রমণ নেমে আসে। যা নিয়ে ওজিল ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ``আমি জিতে গেলে জার্মান, আর হেরে গেলেই অভিবাসী। এমন শুনতে শুনতে ক্লান্ত। কীভাবে রাশিয়া বিশ্বকাপে হারের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্টে সঙ্গে আমার দেখা করার প্রসঙ্গ জুড়ে দেওয়া হয় তা জানি না।`

ওজিল বলেন, খারাপ পারফর্ম করলে যেকোনো ফুটবলারকে সমালোচনা শুনেছি। আর্সেনালের হয়ে খেলার সময় তিনি এমন সমালোচনা অনেকবার শুনেছেন, কিন্তু কেউ যদি তাঁর ঐতিহ্য, আমার শিকড়কে নিয়ে কটাক্ষ করে সেটা আমি সহ্য করব না।``

বুন্দেশ লিগা, লা লিগা ও প্রিমিয়ার লিগ-বিশ্বের কঠিন তিনটি লিগে খেলা ওজিল তাঁর দেশের সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন। ওজিল বললেন, রাশিয়ায় জার্মানির বিদায়ের পর থেকেই আমার সঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দেখা হওয়া নিয়ে খবর বেশি করে ছাপা হতে থাকে। আসলে পরিকল্পিতভাবে এটা প্রমাণের চেষ্টা চলছিল যে আমি একজন জার্মানের মত খেলিনি। অথচ ২০১৪ বিশ্বকাপে জয়ের পর এরাই আমায় দেশের হিরো বলে মাথায় তুলে নেচেছিল।

শুধু দেশের ফুটবল ফেডারেশন, সংবাদমাধ্যম নয় স্পন্সরদেরও এক হাত নেন ওজিল। বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা ফুটবলারের অভিযোগ, `তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশ কিছু প্রমোশনাল ইভেন্টে বাদ দেওয়া হয়।``তবে জার্মানির হয়ে না খেললেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২৯ বছরের ওজিল খেলতে চান বলে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বলে ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে খবর।

২০০৯ সালে দেশের জার্সিতে অভিষেক হয় ওজিলের। জার্মানির হয়ে খেলেন মোট ৯২টি ম্যাচ। ২৩টি গোলও তিনি করেছেন।

/ এআর /