ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার সুষ্ঠ বিচার চায় ছাত্রলীগ 

প্রকাশিত : ১১:২৭ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৫২ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার

বন্ধ হওয়া আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ। আজ মঙ্গলবার শহরের একটি রেস্টুরেন্টে দুপুর ১২টায় জেলা ছাত্রলীগ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইয়াসির আরাফাত এ দাবি জানান। এসময় তিনি হালমাকারী বিএনপি জামায়াতের কর্মী বলেও দাবি জানান। ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত ওরফে তুষার বলেন, জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ উঠলেও তিনি বলেছেন, দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে আসলে এর সঙ্গে কারা জড়িত। তাঁর দাবি, এটি বিএনপি-জামায়াত করেছে। তবে জেলা বিএনপি অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট বলে দাবি করেছে।    

তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলেছি, আপনারা খুঁজে বের করেন কে দোষী। আমরা তো এই ন্যক্কারজনক ঘটনা চাই না। আমরা চাই সুষ্ঠু বিচার হোক। কারা হামলা করেছে, দোষী বের হয়ে আসুক। দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে, কারা এর সাথে জড়িত।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইয়াসির আরাফাত। তাঁর পাশে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ। পরে দুজনই সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন।

গত রোববার বিকেলে মানহানির মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়ায় গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান। আদালত চত্বরে তাঁর ওপর তিন দফায় এ হামলা হয়। ইট, পাথর ও লাঠির আঘাতে তাঁর গাল, কপাল ও মাথার পেছনে কেটে যায়। পরে যশোর থেকে উড়োজাহাজে করে ঢাকায় এনে তাঁকে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাহমুদুর রহমানের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর ওপর এ হামলা চালিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা নীরব ছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘এটা যে জামায়াত-বিএনপি ঘটিয়েছে, প্রশাসন একটু খোঁজ করলেই বুঝতে পারবে, আপনারাও (সাংবাদিক) টের পাবেন। আবারও এ বলেন, তাঁর (মাহমুদুর) ওপর সাধারণ আমজনতা ও দুর্বৃত্তরা আঘাত করেছে। 

হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘সেখানে (হামলার সময়) ছাত্রলীগের কেউ ছিল না। জেনেছি, সেখানে মুখোশ পরা ছিল অনেকে। আসলে ছাত্রলীগ কখনো মুখোশ পরে হামলা করে না, এটা হামলা করে কারা আপনারা অতীতে দেখেছেন, জঙ্গিরা চেহারা গোপন করে মুখোশ পরে হামলা করে। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা করার জন্য এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য জামায়াত-বিএনপি এটা করার চেষ্টা করতে পারে।

লিখিত বক্তব্যে ইয়াসির আরাফাত উল্লেখ করেন, তিনি নিজে মামলার বাদী। তাই আদালতে গিয়েছিলেন। বেলা তিনটার মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি আদালত চত্বর ত্যাগ করেন। হামলার ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়। ছাত্রলীগ আদালত চত্বরে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ছিল। তাঁর (মাহমুদুর) ওপর সাধারণ আমজনতা ও দুর্বৃত্তরা আঘাত করেছে।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ বলেন, বিএনপির মধ্যে একটা মতবিরোধ আছে। ধারণা করছি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মধ্যেই এই গ্যাঞ্জামটা হয়েছে। বিএনপির কোনো দুষ্কৃতকারী এটা করেছে। এবং সামনে নির্বাচন সেটা আমাদের ওপর দায়ভার দিতে চাইছে। সাদ আরও বলেন, ‘যারা দুর্বৃত্তায়ন করেছে, তাদের অবশ্যই শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি আমাদের দলের একজন উপদেষ্টা। আমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো বিরোধিতা নেই। বরং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে ছাত্রলীগ। আর মেহেদী আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট। বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা। ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে কারা কী করেছে।

টিআর/এসি