ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বেলজিয়াম রাষ্ট্রদূতের চিটাগাং চেম্বার পরিদর্শন

প্রকাশিত : ০৬:৪৮ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৮ বুধবার

বাংলাদেশের জন্য নিযুক্ত দিল্লীস্থ বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত জান লুইকক্স ২৪ জুলাই বিকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি পরিদর্শন ও চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালকবৃন্দ জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), ওমর হাজ্জাজ, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ইউসুফ মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া দিল্লীস্থ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনার এলেক্সিস বোসুট এবং এস্কেপ বাংলাদেশ লিঃ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.টি.এম. শহীদুল্লাহ রাষ্ট্রদূতের সাথে উপস্থিত ছিলেন।  

বেলজিয়াম রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ এবং বেলজিয়ামের চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসংগ উল্লেখ করে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন এবং বর্তমানে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন- খুব সহজে ও দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশসহ ইউরোপের ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে বেলজিয়ামের বাজার একটি আদর্শ গন্তব্য এবং রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র করণের উপর গুরুত্বারোপ করে এই বিশাল বাজারের সুযোগ গ্রহণ করতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান। রাষ্ট্রদূত বন্দর ব্যবস্থাপনায় এ্যান্টার্প ও চট্টগ্রাম বন্দর ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে বলে মতামত করে বাংলাদেশের অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষিখাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে তাদের অভিজ্ঞতা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিনিময় করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি ঝুড়ি আরো সমৃদ্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বর্তমান সরকারের ১০০টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতকরণে বেসরকারী খাতের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগসহ এ দেশ হতে রপ্তানিযোগ্য পণ্য আমদানি বৃদ্ধির আহবান জানান। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ তরুন প্রজন্মকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষায় বেলজিয়াম সরকারের সহায়তা কামনা করেন মাহবুবুল আলম। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ যৌথভাবে বিনিয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ইউরোপীয়ো দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন। দিল্লীস্থ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনার এলেক্সিস বোসুট বাংলাদেশ ও বেলজিয়াম ব্যবসায়ীদের মধ্যে মেলবন্ধন রচনায় ২০১৯ সালের এপ্রিলে বেলজিয়ামের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা ও চট্টগ্রাম সফর করবেন এবং বি টু বি মিটিং করবেন বলে তথ্য প্রকাশ করেন। মতবিনিময়কালে অন্যান্য বক্তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং এর থেকে জ্বালানী উৎপাদন, ফার্মাসিউটিক্যালস্, মেডিক্যাল ইকুইপমেন্টস, এগ্রো প্রসেসিং, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্যসহ বিভিন্ন খাতে বেলজিয়াম সরকার ও উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, একই দিন সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে চিটাগাং চেম্বার ও ইউএনডিপি’র যৌথ উদ্যোগে প্রাকৃতিকভাবে সংকটপূর্ণ এলাকায় পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালুর উপর একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় ইউএনডিপি’র প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ এম. ফয়সাল প্রাকৃতিকভাবে হালদা নদী রক্ষা ও ব্যবস্থাপনার উপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এতে সরকার হালদাকে প্রাকৃতিকভাবে সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে জানিয়ে হালদা নদীকে প্রাকৃতিক ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে এর দূষণরোধ, বাণিজ্যিক ও সুপেয় পানি সরবরাহের আদর্শ উৎস করে গড়ে তোলা, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও মৎস্য হাবে রূপান্তরিত করতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপের মাধ্যমে একটি মডেল তৈরী ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। কর্মশালায় হালদার বর্তমান চিত্র, সমস্যা ও সমাধানের সম্ভাব্য করণীয় এবং মতামত ব্যক্ত করে আরো বক্তব্য রাখেন চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক ওমর হাজ্জাজ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব তাহেরা ফেরদৌস, ইউএনডিপি’র টিম লিডার (প্রজেক্ট ডিজাইন) মাইকেল গ্রীন, হালদা রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ অধ্যাপক মঞ্জুরুল কবির, চৌধুরী ফরিদ ও মোহাম্মদ আলী, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ হাসান হাবিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক সঙ্গীতাদাশ গুপ্তা, কর্মকর্তা হাসান চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা ও সহ-সভাপতি ডাঃ মুনাল মাহবুব, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ইউসুফ, বিএসআরএম’র লীড সিএসআর রুহী মুর্শিদ আহমেদ, ক্যাব’র ইকবাল বাহার সাবেরী প্রমূখ।

এসি