ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ইমরান জয়ী হলে ভারতের লাভ: ভারতীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদন

প্রকাশিত : ০৯:৩৬ এএম, ২৬ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার

পাকিস্তানের ভোটের পূর্ণ ফলাফল জানা যাবে কাল। কিন্তু আজ সারা দিন ধরে তোলপাড় চলল দিল্লির নর্থ ব্লক-সাউথ ব্লকে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল দফায় দফায় রিপোর্ট নিচ্ছেন র’ এবং আইবি-র কাছ থেকে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের লাভ না লোকসান, শুরু হয়ে গিয়েছে সেই মূল্যায়ন। র-এর প্রাক্তন বাঙালি কর্তা রানা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিমত, ইমরান গদিতে বসলে তিনি হবেন পাক সেনার ‘রোবট’। সেটা এক দিক থেকে ভারতের জন্য শাপে বর হতে পারে।

কারণ? গোয়েন্দাদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ইমরানের সরকার কার্যত সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন সরকার হবে। গণতন্ত্র থাকবে শুধু নামেই। সে ক্ষেত্রে মূলত নওয়াজ় শরিফের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক পাক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে ও সার্বিক ভাবে দেশের আর্থিক উন্নয়নের স্বার্থেও অস্থিরতা চাইবে না সেনা। বরং সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে রাখার দায় থাকবে সেনার উপরেই।

নরেন্দ্র মোদীর শপথে এসেছিলেন নওয়াজ় শরিফ। তার পরে একাধিক বৈঠক হয় দুই নেতার। নওয়াজ়ের মেয়ের বিয়েতেও প্রোটোকল ভেঙে গিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু ভারতের কোনও কথাই রাখেনি পাক সেনা। গোয়েন্দাদের অনেকের মতে, ইমরান ক্ষমতায় এলে সেনার সঙ্গেই সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করতে পারে দিল্লি।

কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ যদিও বলছেন, সেনাবাহিনীর শাসন যদি এত ভালই হয়, তা হলে নির্বাচনের প্রহসন কেন? আদালত থেকে আইএসআই, সবই তো সেনার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৩ সালে যখন সন্ত্রাসবাদ চরমে, তখন পাক ভোটে নামানো হয়েছিল ৭০ হাজার সেনা। আর আজকের ভোটে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার সেনা! পাক নির্বাচন কমিশন সেনা অফিসারদের ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছিল। ফলে বুথে ঢুকে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র ছিল তাঁদের। ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বার এক মাসেরও বেশি আগে পাকিস্তানে পৌঁছয়। এ বার তাদের সেই অনুমতিই দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহ আগে।

গোয়েন্দারা বলছেন, ইমরান একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-পেলে তাঁকে পিপিপি-র সঙ্গে সমঝোতা করতে বলতে পারে সেনা। ভোট প্রচারে পিপিপি নেতা আসিফ আলি জ়ারদারির দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রচার করেছেন ইমরান। সরকার গড়তে জ়ারদারির সঙ্গে হাত মেলানোটা তাই অস্বস্তিকর। তবু ইমরান হয়তো তা-ও মেনে নেবেন বাধ্য হয়ে। নওয়াজ়ের দলকে রুখতে মরিয়া সেনা প্রথমে অবশ্য চাইবে, তেহরিক-এ-ইনসাফের সঙ্গে ছোট ছোট মুসলিম দল আর নির্দলদের মিলিয়ে সরকার গঠন করে নিতে! তাতে যদি না হয়, শেষ বিকল্প পিপিপি।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
এমজে/