স্টেডিয়াম থেকে রাজনীতিতে
প্রকাশিত : ১০:৩৪ এএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার
পাকিস্তান ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তী বলা হয় ইমরান খান। একসময় তার দাপটে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা কাপত। ব্যাট-বল সমানতালেই চলত তাঁর। এমনকি অধিনায়ক হিসেবেও টিম-মেটদের দারুণ প্রেরণা যোগাতে পারতেন।
তাঁর হাত ধরেই বিশ্বসেরা দুই পেসার ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুছের উত্থান। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন বিশ্বকাপের একমাত্র শিরোপা। যে ইমরান মাঠে ১১ জনের দায়িত্বে ছিলেন তার ওপরই বর্তাল ২০ কোটি মানুষের দায়িত্ব। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তিনি। স্টেডিয়াম থেকে সোজা ক্ষমতার মসনদে যাচ্ছেন তিনি।
স্টেডিয়াম থেকে রাজনীতির মাঠ কাঁপানো শুধু ইমরানের বেলায়ই নয়। সাবেক এ প্লে-বয়ের মতো এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপের আরও অনেক তারকা খেলোয়াড় থেকে রাজনীতির মাঠ দাপাচ্ছেন। তেমন কিছু তারকা খেলোয়াড় এবং রাজনীতিবিদের নিয়ে এই ফিচার।
অর্জুনা রানাতুঙ্গা: ১৯৯৬ সালে শ্রীলংকার বিশ্বকাপ জয়ী দলটির নেতৃত্ব দেন অর্জুনা রানাতুঙ্গা। দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ছিরেন। এরপর নির্ভরতার পরিচয় দেন রাজনীতিতে। বর্তমানে তিনি দেশটির জাহাজ ও পানি পরিবহনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
সনাথ জয়সুরিয়া: সনাথ জয়সুরিয়াকে শ্রীলংকানদের পাশাপাশি বিশ্ববাসীও ভুলবে না। তার মারকুটে ব্যাটিং নৈপূণ্য স্টেডিয়ামে সবাইকে মাত করে দিত। ২০১০ সালে ক্রিকেটার থাকা অবস্থায় দেশটির সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। মাতারা থেকে শ্রীলংকার সংসাদ নির্বাচিতও হন জয়সুরিয়া। দেশটির মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। মাতারার আসন থেকে তিনি রেকর্ড ভোটে নির্বাচিত হন। তবে ২০১৫ সালের নির্বাচনে আর অংশ নেননি তিনি।
রোমারিও: রোমারিওকে এখনও বিশ্ব ফুটবল ভুলে নি। তার অসাধারণ ড্রিবলিংয়ে সবাই অবাক হয়ে যেতো। এখন রাজনীতির মাঠেও ড্রিবলিংয়ে কাবু করছেন প্রতিপক্ষ দলের রাজনীতিবিদদের। ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ফুটবলার রোমারিও দেশটির গভর্নর হওয়ার দৌড়ে আছেন। এর আগে দু`বার রিও ডি জেনিরোর সিনেটর হয়েছেন তিনি।
বেবেতো: ব্রাজিলের হয়ে ১৯৯৪ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছেন বেবেতো। সেবার দলের হয়ে তিন গোল করেন তিনি। এরপর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে আবার ব্রাজিল ফাইনালে ওঠে। ফ্রান্সের কাছে হারলেও ১৯৯৮ বিশ্বকাপে নিজের নামের পাশে তিন গোল লেখেন তিনি। বর্তমানে বেবেতো রিও`র নিম্ন সভাকক্ষের সদস্য। নামতে চান দেশটির সিনেটর হওয়ার লড়াইয়ে।
গ্যারি কাসপারভ: রাশিয়ায় পুতিনের বিপক্ষে রাজনীতির মাঠে লড়তে গেলে মাথায় অঢেল বুদ্ধি থাকা চায়। গ্যারি কাসপারভ হয়তো তা পারবেন। কারণ তিনি বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন। তাকে বিশ্বের সেরা দাবাড়ূও বলা হয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিপক্ষে রাজনীতিতে নেমেছেন কাসপারভ। ২০০৫ সালে দাবা ছাড়ার পর কাসপারভ ওই বছরই দল গঠন করেন। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জনমত গঠনের।
নাইমুর রহমান দুর্জয়: বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। দেশের হয়ে ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ২৯টি। এরপর রাজনীতিতে নামা দুর্জয়ের। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশের ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ খান জয় এমপি হয়ে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন রাজনীতিতে নেমেছেন।
ভারতের শচীন টেন্ডুলকার, নভোজিৎ সিং সিধু, অলিম্পিকে রূপা জয়ী রাজ্যবর্ধন রাঠোর, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ব্রিটিশ তারকা সেবাস্তিয়ান কো, আমেরিকার বাস্কেটবল তারকা বিল ব্র্যাডলিরা খেলার পাশাপাশি রাজনীতির মাঠ গরম করছেন।
/ এআর /