ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ইউটিউব দেখে গর্ভপাত: প্রাণ গেল স্ত্রীর

প্রকাশিত : ০২:৩১ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৩:৩৭ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার

সোশ্যাল মিডিয়াই যেন আমাদের জীবনের শিক্ষক। গুগল তো হাতের কাছে রয়েছেই। প্রতি দিনের সমস্যার হাল খুঁজতে দ্বারস্থ হই ফেসবুক, ইউটিউবের কাছে। কিন্তু কখনও কখনও সেখান থেকে অর্জিত জ্ঞান যে ভয়ানক হতে পারে, তার প্রমাণ ভারতের তামিলনাড়ুর এক মর্মান্তিক ঘটনায়।

কার্তিকেয়ন নামে এক তামিল তরুণ ইউটিউবেই দেখেছিলেন কীভাবে বাড়িতেই স্বাভাবিক গর্ভপাত করা যায়। ভেবেছিলেন সহজ হবে বিষয়টি। তাই তার গর্ভবতী স্ত্রীর ওপরে প্রয়োগ করলেন কার্তিকেয়ন। কিন্তু ফল হল মারাত্মক। বাড়িতে গর্ভপাত করাতে গিয়ে স্ত্রী কৃতিগার প্রাণ গেল। তামিলনাড়ুর ত্রিরুপুরের এই মর্মান্তিক ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। 

শিক্ষকরা ‌যে এ রকম ঝুঁকি নিতে পারে তা ভাবতে পারছেন না এলাকার মানুষজন। ত্রিপুরের এক স্কুলে শিক্ষকতা করেন কার্তিকেয়ন ও কৃতিগা। স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের ওপরে বিশ্বাস ছিল স্বামী কার্তিকেয়নের। সেখান থেকেই বিপত্তি।

গত রোববার প্রসব বেদনা অনুভব করেন কৃতিগা। আর তখনই ইউটিউবে সন্তান প্রসবের ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা কাজে লাগান স্বামী কার্তিকেয়ন। বিকালে প্রসব ‌যন্ত্রণা শুরু হলেও কৃতিগা সন্তান প্রসব করেন রাত দেড়টার দিকে। পুরোটাই দেখাশোনা করেন কার্তিকেয়ন। কোনও হাসপাতালে নয়, সন্তান প্রসব হয় কার্তিকেয়নের ঘরেই। কিন্তু প্রসব করতে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এমনকি অচেতনও হয়ে ‌যান কৃতিগা। তখন অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ‌যাওয়া হয়।

ত্রিপুরের সরকারি হাসপাতালের এক আধিকারিক কে বুপাথি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, প্রসব করতে গিয়ে মহিলার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তাতেই তিনি জ্ঞান হারান ও মারা ‌যান।

আমির খানের থ্রি ইডিয়টস সিনেমায় এরকমই এক দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। সেখানে কলেজের কমনরুমে এক অভিনেত্রীর প্রসব করাচ্ছে কলেজেরই এক ছাত্র। তাও আবার হাতে তৈরি ‌যন্ত্র দিয়ে। প্রায় সরকমই বিদ্যা প্রয়োগ করতে গিয়ে প্রাণ গেল ওই প্রসুতির।

উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগেই মারা গেছেন পরিবারের এক বয়স্ক ব্যক্তি। পরিবারের বিশ্বাস ছিল তিনি সন্তান রূপে কৃতিগার গর্ভে এসেছেন। তাই এই প্রসব নিয়ে গোটা পরিবারেই একটা উৎসাহ ছিল। সবাই চাইছিলেন ঘরেই স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান প্রসব করুক কৃতিগা। পাশপাশি এটাও জানা ‌যাচ্ছে, সন্তান ধারণের পর কৃতিগা কখনও কোনও চিকিৎসকের কাছে ‌যাননি।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনু‌যায়ী, কৃতিগাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন তার এক বন্ধু লাবণ্য। তারা কৃতিকাকে ঘরেই প্রসব হওয়ার উৎসাহ দেন। এলাকার কয়েকজন গর্ভবতীকে সন্তান প্রসবে সাহা‌য্য করেছেন লাবণ্য। এমনটাই সংবাদমাধ্যমে খবর। এদিকে, পুলিশ কার্তিকেয়নকে গ্রেফতার করেছে। লাবণ্যকেও জেরা করা হচ্ছে।

সূত্র: জিনিউজ

একে//