কৃষি জমি কমতে থাকলে এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে: ড. আতিউর
প্রকাশিত : ০৪:০৩ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার
দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য সনাতন কৃষির সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় যান্ত্রিকীকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আতিউর রহমান বলেন, দেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ এখনও জীবিকার জন্য সরাসরি কৃষির উপর নির্ভরর্শীল। অথচ নির্ভরর্শীল এ কৃষি খাতের আওতা দিনদিন কমে আসছে। প্রতিবছর চাষযোগ্য জমির পরিমান দশমিক ৭৪ শতাংশ হারে কমছে। এভাবে ১৯৭১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখ হেক্টর জমিতে গ্রামীণ ও নাগরিক স্থাপনা বসানো হয়েছে। যা সত্যিই আমাদের জন্য, কৃষির জন্য অশনি সংকেত।
এভাবে চলতে থাকলে আমাদের এসডিজি অর্জন অসম্ভব হয়ে উঠবে। কেননা এসডিজি অর্জন করতে হলে আমাদের একর প্রতি ফসল উৎপাদন দ্বিগুণ হারে বাড়াতে হবে। যা চাষযোগ্য জমি কমে আসলে হবে না। তাই আমাদের চাষ যোগ্য জমি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়াতে হবে। তাতে উৎপাদন বাড়বে, কৃষকের উৎপাদন খরচও কমবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে।
মেটাল গ্রুপ আয়োজিত ‘এগ্রি ম্যাশিনাইজেশন: দি রোল অব প্রাইভেট সেক্টর এন্ড এক্সেস টু ফাইন্যান্স’ শীর্ষক এ সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন মেটাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামাল, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল, অর্থনীতিবীদ অধ্যাপক হান্নানা বেগম প্রমুখ।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের কৃষি খাতের জন্য আলাদা একটি কৃষি শিল্পনীতি দরকার। যে নীতির মাধ্যমে এ খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে দিক নির্দেশনা থাকবে। দেশের পরিস্থিতিতে সময় এসেছে কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগানো। এ খাতে অর্থবরাদ্দ বাড়ানো। কৃষি ও কৃষকের অর্থ সহায়তায় সরকারের দেড়শ’ কোটি টাকার একটি ফান্ড আছে। কৃষকের প্রয়োজনে সে ফান্ড হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া উচিত। এ ফান্ডের টাকা কৃষক পর্যাযে পৌঁছাতে ব্যাংক ও গ্রামীণ এনজিওগুলোর মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করে আগানো যেতে পারে।
মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামাল বলেন, কৃষি নির্ভর এই দেশের কৃষিযান্ত্রিকীকরণের কোনো বিকল্প নেই। সরকারি ও বেসরকারি খাতের পাশাপাশি দেশের আর্থিক সেবা খাতেরও কৃষির যান্ত্রিকীকরণে ব্যাপক ভুমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা এবং সরকারের অনুদানের বা ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত। তবে ব্যাংক বা অন্য আর্থিক সেবাদানকারিদের পক্ষে একটি বাজার নির্ভর পদ্ধতিতে কৃষির যান্তিকীকরনে ভূমিকা রাখা সম্ভব।কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে আমাদের এটা করা উচিত।
অনুষ্ঠানে দেশের প্রথিতযশা কৃষিবিদ, কৃষি অর্থনীতিবীদ, শিক্ষাবীদ, কৃষি গবেষক ও বিজ্ঞানিসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরকে// এআর