রোজ এক গ্লাস লিচুর জুসে মিলবে ৮ উপকার
প্রকাশিত : ০৪:০৯ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৬:৫৭ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার
এই গরমে মন-মেজাজকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে যদি চান, তাহলে নিয়মিত এক গ্লাস করে লিচুর রস খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটির ভেতরে উপস্থিত ফাইবার এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে, একাধিক রোগ দূরে পালাতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, মেলে আরও অনেক উপকার। তাই বয়স ৩০-এর পরে প্রতি মাসে যদি ডাক্তারকে ৫০০-১০০০ টাকা ফিস দিতে না চান, তাহলে আগামী পাঁচ মিনিটের জন্য আপনার ঠিকানা হতেই হবে এই প্রবন্ধ। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকটি গবেষণা চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানতে পেরেছেন, ছোট্ট এই ফলটির শরীরে এত ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে, যা চোখের ক্ষমতার উন্নতি তো ঘটায়ই, সেই সঙ্গে হার্ট থেকে মস্তিষ্ক, শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা যাতে বৃদ্ধি পায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জটিল রোগেরা দূরে থাকতে বাধ্য হয়। শুধু তাই নয়, শরীরের আরও বেশ কিছু উপকার হয়, যেমন ধরুন-
রক্তচাপকে স্বাভাবিক থাকে
লিচুতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম শুধু রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখে না, সেই সঙ্গে শিরা এবং ধমনীকে প্রসারিতও করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ মাত্রা ছাড়ানোর সুযোগই পায় না। তাই যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের রোজের ডায়েটে এই ফলটি থাকা মাস্ট!
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, লিচুর রসে উপস্থিত ভিটামিন সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ত্বকের ভেতরে প্রদাহের মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে ত্বকে প্রকাশ পেতে থাকা বলিরেখাগুলোও গায়েব হতে থাকে। সেই সঙ্গে স্কিন এতটাই টানটান হয়ে ওঠে যে ত্বকের বয়স কমতে সময় লাগে না। তাই খাতায় কলমে শরীরের বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স না বারুক, এমনটা যদি চান, তাহলে প্রতিদিন এক গ্লাস করে লিচুর রস খেতে ভুলবেন না যেন!
ক্যান্সারকে দূরে রাখে
আমাদের শরীরে জমতে থাকা টক্সিক উপাদানের মাত্রা বেড়ে গেলে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই কোনওভাবেই যাতে দেহের ভেতরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা না ছাড়ায়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করে দিতে কাজে আসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে লিচুতে। তাই তো প্রতিদিনের ডায়েটে লিচুর জুসকে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
দৃষ্টিশক্তি বাড়তে শুরু করে
আজকাল ইয়ং জেনারেশনকে সারাক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে হয়। সেই সঙ্গে স্মার্ট ফোনে মুখ গুঁজে ওয়েব দুনিয়ায় ঘোরা-ফেরা তো আছেই। এমন পরিস্থিতে চোখের উপর এতটা চাপ পরে যে ধীরে ধীরে চোখের ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। এমন অবস্থায় চোখকে বাঁচাতে লিচুর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই ফলটিতে রয়েছে ফ্লেবোনয়েড, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং ইলেজিক অ্যাসিড, যা চোখের ক্ষতি করে এমন টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে দৃষ্টিশক্তি তো বাড়েই। সেই সঙ্গে ড্রাই আইয়ের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তাই চটজলদি যদি চোখের স্বাস্থ্য়ের উন্নতি ঘটাতে হয়, তাহলে প্রতিদিন লিচুর রস বা কাঁচা লিচু খেতে ভুলবেন না যেন!
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
হার্টেক সুস্থ সবল রাখতে যে উপাদানগুলো বিশেষ ভূমিকা নেয়, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ফাইবার, ফলেট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি। আর এই সবকটি উপাদানই প্রচুর মাত্রায় রয়েছে লিচুর জুসে। তাই তো এই ফলটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করলে কোনও ধরনের হার্টের রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে আয়ু বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো!
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
জীবাণুর আক্রমণ থেকে শরীরকে বাঁচাতে একেবারে প্রাথমিক সুরক্ষা বলয় হল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তাই তো এই দেওয়ালে কমজোরি হয়ে গেলে মারাত্মক বিপদ! কারণ এমনটা হলে জীবাণুরা বিনা বাঁধায় শরীরের একেবারে ভিতর পর্যন্ত ঢুকে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে। ফলে নানাবিধ রোগে শরীরকে করে তুলবে জর্জরিত। তাই তো বলি এমনটা আপনার সঙ্গেও ঘটুক, তা যদি না চান, তাহলে ইমিউন সিস্টেমের খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজটি করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে স্ট্রবেরি। কিভাবে? রক্তিম এই ফলটির ভেতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা নানাভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নামক দেওয়ালকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন আমাদের দেহের যে পরিমাণ ভিটামিন সি-এর প্রয়োজন পরে, তার সিংহভাগ মেটাতেই সক্ষম এই ফলটি। তাই তো সুস্থ থাকতে এই ফলটির সঙ্গে বন্ধুত্ব না করলে কিন্তু চলবে না।
ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়
বয়স বাড়তে থাকলে স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই শরীরে প্রতি অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। একই ঘঠনা ঘটে মস্তিষ্কের সঙ্গেও। আর এই ডিজেনারেশন শুরু হয় সাধারণত ৩০ বছর পর থেকে। তাই তো এই সময় থেকেই বেশি করে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কারণ এই দুটি উপাদান মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। ফলে বয়স বাড়লেও তার কোনও প্রভাব পরে না ব্রেনের উপর। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে, লিচুতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এই দুইই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে লিচুতে আয়োডিন এবং পটাশিয়ামও রয়েছে, যা ব্রেন ফাংশনের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমে
জয়েন্টকে সচল রাখতে যে তরল উপাদান আমাদের শরীরের ভেতরে রয়েছে, তা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গাঁটে গাঁটে টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে এমন ধরনের হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন যদি লিচুর রস খাওয়া যায়, তাহলে জয়েন্টের সচলতা পুনরায় বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে ফলটিতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
একে//