ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২২ ১৪৩১

তদবিরে অতিষ্ট ওবায়দুল কাদের!

আলী আদনান

প্রকাশিত : ০৫:০৪ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮ শনিবার

শুক্রবার। সন্ধ্যা সাতটা। ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার পরও প্রটৌকলে তোয়াক্কা নেই তাঁর। নিরাপত্তা ছাড়াই নেতাকর্মী বেষ্টিত হয়ে কার্যালয়ে ঢুকলেন তিনি।

আগে থেকেই তাঁর ( ওবায়দুল কাদের)  নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাটের নেতাকর্মীরা জানতেন নেতা আসবেন। অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ভিড় ধাক্কা ধাক্কি। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁর সঙ্গে থাকা নেতারা।

ওবায়দুল কাদের কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে বসতেই তাকে ঘিরে ধরেন শ`খানেকের বেশি লোক। সবার হাতে ফাইল, নানা ধরণের কাগজ পত্র। প্রথমেই এগিয়ে গেলেন একজন তরুণী। বয়স পঁচিশ থেকে ত্রিশের মধ্যে হবে। নোয়াখালীর অধিবাসী হলেও ঢাকায় থাকেন। তরুণী একটি তদবির নিয়ে এসেছেন। বিকেল থেকে তাকে কার্যালয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। যার (ওবায়দুল কাদের) জন্য এত অপেক্ষা তাঁকে আজ (শুক্রবার) ভীষণ বিরক্ত হতে দেখা গেল।

বললেন, ‘নো, নো, কোনো সুপারিশ, তদবির হবে না! আমার মাথার ওপর তিন তিনটা (রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আমি এখন নির্বাচন মনিটর করবো। যান, সবাই যান।

তদবিরের জন্য আসা তরুণী তখন ঢোক গিলে বলল, ‘স্যার আমি কবিরহাট থেকে এসেছি ‘ এ লাইনটি শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘কবিরহাট নাকি মাইজদী তা আমার দেখার দরকার নাই। এখন সবাই যান।’

ইতোমধ্যে আরও দু`একজন একই চেষ্টা করে নেতার সাড়া না পেয়ে হতাশ হলেন। দেখা গেল তারা সবাই নোয়াখালীর বা ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা কবিরহাটের।

এরইমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে ঢুকলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ আরও কয়েকজন নেতা।

এই পর্যায়ে মন্ত্রী নিজে দাঁড়ালেন। তারপর তদবিরের জন্য আসা লোকজনকে হাতজোড় করে বললেন, আপনাদের অনুরোধ করছি। আপনারা এখন যান। তদবির সুপারিশ অনেক করেছি। এখন মাথার উপর নির্বাচন। এখনও তদবির করলে দল চালাবো কখন?

এরপর তিনি কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিতে একজনকে ইশারা করেন। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে থাকা একজন এ সময় এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মানুষের ধারণা জনপ্রতিনিধি মানেই তদবিরের জায়গা। বেশিরভাগ মানুষ তদবিরের জন্যই আসে। এখানে দল, সরকার, নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।  

জানা গেছে, সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে এসে  তদবিরের পরিমাণ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।বা নির্বাচন সামনে রেখে নিজের আখের গুছাতে তড়িঘড়ি একশ্রেণীর সুবিধাভোগীর। এতে ওবায়দুল কাদেরসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা বিরক্ত।

এ এ / এআর /