সরকার গঠনের হিসাবে ব্যস্ত ইমরানের দল
প্রকাশিত : ০৭:০৮ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৮ রবিবার
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে এখন সরকার গঠনের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। শনিবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, সরকার গঠনের জন্য আরো অন্তত ২২টি আসন প্রয়োজন তাদের। সেক্ষেত্রে ইমরানকে অন্য দল কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোট সরকার গঠন হবে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, নির্বাচনে পিটিআই পেয়েছে ১১৫টি আসন। পিএমএল-এন ৬৪টি ও পিপিপি ৪৩টি আসনে জয় পেয়েছে। পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করতে চাইলে একটি দলকে ১৩৭টি আসন পেতে হয়। সে সংখ্যা নিশ্চিতে ইমরানের দলের দরকার ২২টি আসনের সমর্থন। ডন জানিয়েছে, শনিবার দিনভর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোতে নতুন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো কাদের দেওয়া হতে পারে তাদের সম্ভাব্য তালিকা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো। পিটিআই-এর এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ডন জানায়, বানিগালায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা হয়নি। সরকার গঠনের হিসাব মেটাতেই দল এখন ব্যস্ত। ডনের পক্ষ থেকে পিটিআই-এর নেতা শাফকাত মেহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, বানিগালায় কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি। তার দাবি, সরকার গঠনের পর দলকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কথা হয়নি। শাফকাত মেহমুদকে দলের পক্ষ থেকে জাতীয় পরিষদের স্পিকার হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো। সে খবরও নাকচ করে দিয়েছেন শাফকাত।
যেসব পিটিআই নেতা নির্বাচনে একাধিক আসনে জয় পেয়েছেন, সাংবিধানিক শর্ত মেটাতে উপনির্বাচনের জন্য তাদের অতিরিক্ত আসনগুলো ছেড়ে দিতে হবে। একজন নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য কেবল একটি আসনের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান পাঁচটি আসনে জয় পেয়েছেন। সেক্ষেত্রে তাকে চারটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। আরেক পিটিআই নেতা গোলাম সারওয়ার খানকেও একটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক একইসঙ্গে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনে জয় পেয়েছেন। পিটিআই যদি আবারও তাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়, তবে তাকে জাতীয় পরিষদের আসনটি ছেড়ে দিতে হবে। এ অবস্থায় পিটিআই-এর প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ১১৫টি থেকে কমে ১০৯-এ দাঁড়াবে। বাকি ৬ আসনের উপনির্বাচনে নতুন করে জয় পেতে হবে তাদের। এ হিসাব মাথায় রেখে পিটিআই নেতৃত্ব এখন ছোট ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা যায়, পিটিআই-এর সাবেক মহাসচিব জাহাঙ্গীর তারিন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও মুত্তাহিদা কওমী মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। নির্বাচনে এমকিউএম-পি ৬টি আসন পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ১৩টি আসনে। সূত্র জানায়, ইমরান নিজেও দুটি আসন পাওয়া গ্র্যান্ড ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ)’র নেতা মমতাজ ভুট্টোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে জোটে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে চারটি আসন পেয়েছে পিএমএল-কয়েদ (পিএমএল-কিউ)। এরমধ্যে দলটির নেতা চৌধুরী পারভেজ এলাহি দুইটি আসন পেয়েছেন। উপনির্বাচনের হিসাব বাদ দিলে, দলটি ইমরানের সঙ্গে জোটভুক্ত হলে তিনটি আসন যোগ হবে সম্ভাব্য জোট সরকারে। পাশাপাশি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি)-এরও সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে ইমরানের দল। বিএপি নির্বাচনে চারটি আসন পেয়েছে।
সূত্র- ডন
আরকে//